এখন-তখন: বোরহান শেখ।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার যখন বিচার চলছে, তখনই ধরা পড়ল প্রায় তিন বছর ধরে পালিয়ে থাকা এক অভিযুক্ত। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর দাবি, বোরহান শেখ নামে ওই অভিযুক্তকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের অফিসাররা শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার করেছেন। বর্ধমানের বাসিন্দা, বছর তিরিশের বোরহানের হদিস পেতে তিন লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এনআইএ-র এক শীর্ষকর্তা দিল্লি থেকে এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘যত দূর শুনেছি, বোরহান শেখকে কলকাতা পুলিশ ধরেছে এনআইএ আদালতের জারি করা জামিনঅযোগ্য পরোয়ানার ভিত্তিতে। সে ক্ষেত্রে ওঁরা বোরহানকে আমাদের হাতে তুলে দেবেন। তাই, বোরহানের জন্য আমাদের ঘোষণা করা পুরস্কারের টাকা ওঁরা পাবেন।’’
কলকাতার এনআইএ আদালতে এখন খাগড়াগড় মামলার বিচার চলছে। বৃহস্পতিবার এক সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত জানায়, পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ হবে ২০ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্দেহভাজন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গি বোরহানকে গ্রেফতার করার খবর জানাল এসটিএফ। বোরহানকে নিয়ে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭। ওই মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা ৩৪।
এক বছর আগে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ-ই খাগড়াগড় মামলার পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল। যাদের অন্যতম ছিল ইউসুফ গাজী। ইউসুফের কাছ থেকে পাওয়া কিছু সূত্র ধরে টানা অনুসন্ধান চালিয়ে বোরহানের হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। কারণ, ইউসুফের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল এই বোরহান। সে জেএমবি-র একটি শিবিরে জঙ্গি প্রশিক্ষণও নেয়।
আরও পড়ুন: পুলিশে রেশনের ভাতা বাড়ল ৫০০ টাকা
লালবাজারের একটি সূত্রের খবর, ধরা পড়ার আগে গত কিছু দিন বোরহান মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় ছিল। মুর্শিদাবাদের রানিতলা এলাকার পূর্ব নাজিরচকেও তার একটি ডেরা আছে। ২০১৪-র ২ অক্টোবর খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে সে বেশ কিছুকাল পালিয়েছিল বীরভূম ও নদিয়ায় তার বিভিন্ন গুপ্ত ডেরায়। সেই সময়েও সে মুর্শিদাবাদে গিয়েছিল। এর মধ্যে সে বাংলাদেশে গিয়েছিল কি না, সেটা গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন।
বর্ধমানের মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া গ্রামে যে মাদ্রাসাকে গোয়েন্দারা জেএমবি-র জঙ্গি ও জেহাদি প্রশিক্ষণকেন্দ্র বলে চিহ্নিত করেন, সেটি বোরহানেরই আট কাঠা জমির উপর তৈরি হয়েছিল। তার ঢিল ছোড়া দূরত্বে বোরহানের বাড়ি। এখন সেখানে তার বৃদ্ধা মা থাকেন।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বোরহানকে জেএমবি-তে নিয়ে এসেছিল ইউসুফ। শিমুলিয়া মাদ্রাসায় বোরহানের স্ত্রী শাহনওয়াজ বেগম ও ইউসুফের স্ত্রী আয়েসা বিবি মহিলাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিত বলে গোয়েন্দাদের দাবি। ওই দু’জনের খোঁজ কিন্তু এখনও পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ, শাহনওয়াজ বেগমের বাপের বাড়ি বাংলাদেশে।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর এনআইএ জানতে পারে, বোরহান ও ইউসুফ মিলে শিমুলিয়া মাদ্রাসা থেকে কিছুটা দূরে, বোরহানেরই আর একটি জমিতে দ্বিতীয় একটি মাদ্রাসা তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy