Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

স্বাস্থ্যকর্মীর হাতে চিঠি গুঁজে নিজের বিয়ে রুখল ‘কন্যাশ্রী’

বেঁকে বসে সোনালি। আপত্তিতে কাজ না হওয়ায় বিডিওকেই চিঠি লিখে মঙ্গলবার রাতে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর দ্বারস্থ হয় সে।

স্কুলে সোনালি। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলে সোনালি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

স্বাস্থ্যকর্মী প্রায় পাড়ায় আসেন। তাঁর হাতেই চিঠি গুঁজে দিয়েছিল নবম শ্রেণির এক আদিবাসী ছাত্রী।

অন্য আধিকারিকদের হাত ঘুরে গড়বেতা ২-এর বিডিও স্বপনকুমার দেবের টেবিলে পৌঁছে গিয়েছিল চিঠি। সেখানে লেখা—‘আমি কিয়ামাচা হাইস্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ি। বয়স ১৬। বাবা জোর করে বিয়ে দিচ্ছে। যাতে আমি পড়তে পারি তার সুব্যবস্থার জন্য আবেদন করছি’। বুধবার সকালে এই চিঠি পড়ে স্বপনবাবু সমাজ কল্যাণ আধিকারিক সুব্রত বাজপেয়ীকে পাঠিয়ে দেন ওই ‘কন্যাশ্রী’ ছাত্রী সোনালি হাঁসদার বা়ড়ি। বাগপিছলা গ্রামে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন সুব্রতবাবু। সোনালির বাবা-মা মুচলেকা লিখে দেন, ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না। সোনালির বাবা মানতা হাঁসদা বলেন, ‘‘ব্লকের লোকেরা এসে বলতে বিয়েটা বন্ধ করে দিয়েছি।’’

মানতা কৃষি শ্রমিক। তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে সোনালি বড়। নিশ্চিন্দিপুরের এক যুবকের সঙ্গে জুলাই মাসেই মেয়ের বিয়ের ঠিক করেছিলেন মানতা। কিন্তু বেঁকে বসে সোনালি। আপত্তিতে কাজ না হওয়ায় বিডিওকেই চিঠি লিখে মঙ্গলবার রাতে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর দ্বারস্থ হয় সে। অনুরোধ করে, গোপনে চিঠিটা পৌঁছে দিতে হবে বিডিও-কে। সোনালি বলে, ‘‘এখন মেয়েদের জন্য এত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সরকার। আমি পড়তে চাই। তাই এখনই বিয়ে করব না বলেছি।’’

বিয়ে আটকেছে। সোনালি খুশি। খুশি ওই স্বাস্থ্যকর্মীও। তাঁর কথায়, ‘‘ধীরে ধীরে যে সচেতনতা ফিরছে এটা দেখে ভাল লাগছে।’’ বিডিও স্বপনকুমার দেব বলেন, ‘‘মেয়েটির পড়াশোনার বিষয়ে ব্লক প্রশাসন থেকেও সাহায্য করা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE