Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪
কামদুনি-কাণ্ড

খুনিদের শাস্তি কবে, দু’বছর পরেও অপেক্ষা

কামদুনিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ১৫ দিনের মধ্যে কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার চার্জশিট জমা পড়বে। এক মাসের মধ্যে দুষ্কৃতীরা সাজা পাবে। তারপর দু’বছর কেটে গিয়েছে। অভিযুক্তদের সাজা হওয়া তো দূরের কথা, বিচারই শেষ হয়নি। গ্রামের উন্নয়ন ও বাড়তি নিরাপত্তার যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নেতা-মন্ত্রীরা, তারও প্রায় কিছুই হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০৩:৪১
Share: Save:

কামদুনিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ১৫ দিনের মধ্যে কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার চার্জশিট জমা পড়বে। এক মাসের মধ্যে দুষ্কৃতীরা সাজা পাবে। তারপর দু’বছর কেটে গিয়েছে। অভিযুক্তদের সাজা হওয়া তো দূরের কথা, বিচারই শেষ হয়নি। গ্রামের উন্নয়ন ও বাড়তি নিরাপত্তার যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নেতা-মন্ত্রীরা, তারও প্রায় কিছুই হয়নি।

বারাসত আদালত থেকে মামলা এখন কলকাতার নগর দায়রা আদালতে। ন’জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। নিহত তরুণীর পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা নানা ভাবে বিচার পিছিয়ে দিতে চাইছে। নির্যাতিতার এক ভাইয়ের বক্তব্য, ‘‘যে মাংসের দোকান থেকে অভিযুক্তরা মাংস কিনেছিল, তার মালিক সিআইডির কাছে যে বয়ান দিয়েছে, আদালতে তার উল্টো কথা বলেছে। মামলার সাক্ষী এক মুদিও তা-ই করেছে।’’ পরিবারের দাবি, অভিযুক্তদের লোকজন সাক্ষীদের প্রভাবিত করছে। এ দিন ফোনে নির্যাতিতার মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘যারা মেয়েটাকে মেরে ফেলল, তাদের শাস্তি কি দেখে যেতে পারব না?’’

২০১৩ সালের ৭ই জুন কামদুনিতে কলেজ থেকে ফেরার পথে এক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর গণধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে গোটা রাজ্য উত্তাল হয়েছিল। রাজ্যে মেয়েদের উপর নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারের আর্জি নিয়েও গিয়েছিল কামদুনির প্রতিবাদীরা। টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়ালের মতো গৃহবধূরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়ে প্রায় রাতারাতি পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’ তৈরি করে দুষ্কৃতীদের শাস্তির জন্য আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।

শাসক দল ‘শান্তিরক্ষা কমিটি’ তৈরি করে পাল্টা মিছিল, সমাবেশ শুরু করে। শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের উদ্যোগে গ্রামে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। নিহত তরুণীর এক ভাইকে চাকরিও দেয় সরকার, যদিও এখনও সে চাকরি স্থায়ী হয়নি। এর পরেই ওই পরিবার গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।

কেমন আছেন তাঁরা?

দু’বছর পেরিয়েও মাঝরাতে আতঙ্কে ঘুম ভেঙে যায় মায়ের। বাবা ভোর রাতে ঘুম থেকে উঠে কাঁদতে থাকেন। নিহত তরুণীর ভাই জানালেন, এক মুঠো ভাত নিয়ে তাঁরা খেতে বসেন, তা-ও থেকে যায় থালাতে। তবে ভাইয়ের আশা, ‘‘বিচার একদিন শেষ হবেই।
বিচার আমরা পাবই।’’ একই আশায় বুক বাঁধছেন মৌসুমী কয়াল। তাঁর কথায়, ‘‘এ রাজ্যে দুষ্কৃতীরা তো সাজা পাচ্ছে না। তা-ও বুকে আশা নিয়ে বেঁচে আছি।’’

রবিবার নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা কামদুনিতে গিয়ে শহীদ বেদীতে মোমবাতি জ্বালাবেন। গ্রামে মিছিল হবে। নানা রাজনৈতিক দলের নেতা আসবেন। কিন্তু বিচার মিলবে কবে, তার উত্তর খুঁজবে কামদুনি।

অন্য বিষয়গুলি:

rape Kamduni punishment Mamata Banerjee court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE