জঞ্জাল-যন্ত্রণা। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে। —নিজস্ব চিত্র
পিচ ঢালা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে আবর্জনার স্তূপ। পশু-পাখির মৃতদেহ, আবর্জনা পচে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। চলন্ত গাড়ির গতির তীব্রতায় উড়ছে পলিথিন, ময়লা, ছেঁড়া কাগজ। ফলে বাড়ছে পথচলতি মানুষের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। তবু হুঁশ নেই কারও। চিত্রটা উত্তর শহরতলির এক্সপ্রেসওয়েগুলির। আর পুরোটাই হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়, পুর-প্রশাসনের উদ্যোগে। এ নিয়ে পূর্ত দফতর একাধিক মামলা করলেও জঞ্জাল-জট কাটেনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রামচন্দ্রপুরে নিজেদের ভাগাড় থাকা সত্ত্বেও পানিহাটি পুরসভা প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জঞ্জাল ফেলতে শুরু করে। ভাগাড়ের চারপাশে নতুন বসতি গড়ে ওঠায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জঞ্জাল ফেলা নিয়ে প্রতিবাদ আসতে শুরু করে। ফলে রাতের অন্ধকারে পানিহাটি, খড়দহ ও অন্যান্য পুরসভা কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বিটি রোড কিংবা ব্যারাকপুর-বারাসত রোডের ধারে জঞ্জাল ফেলে। তবে পানিহাটি না খড়দহ— জঞ্জাল কার, তা নিয়ে রয়েছে চাপান-উতোরও।
শুধু পুরসভাগুলি নয়, জঞ্জাল ফেলায় সামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষও। ব্যস্ত রাস্তার ধারে য়েখানে বসতি কম অথবা তেমন দোকানপাট গজিয়ে ওঠেনি, সেখানেই জমে উঠছে জঞ্জালের স্তূপ। কামারহাটিতে বেলঘরিয়া স্টেশনের কাছে গজিয়ে ওঠা ফ্ল্যাটগুলির ফাঁকে একটা-দু’টো জমি জঞ্জালের আড়ত। বাড়ছে মশা, মাছি।
এ প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, ‘‘বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে বা কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জঞ্জালের পাহাড়। তার মধ্যেও ফাঁকা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে নিচু জলা জমিগুলি রাতের অন্ধকারে ভরাট হচ্ছে জঞ্জাল দিয়েই। বিটি রোডের ধারেও যেখানে সেখানে জঞ্জাল। পানিহাটির বিধায়ক তো তৃণমূলের মুখ্য সচেতক। কোথায় সচেতনতা?’’ তৃণমূলের মুখ্য সচেতক তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ জঞ্জাল অপসারণের সমস্যা স্বীকার করে নিয়েই বলেন, ‘‘সবই বুঝতে পারছি। জনবসতি দ্রুত হারে বাড়ছে। এত জঞ্জাল কোথায় ফেলা হবে? চেষ্টা হচ্ছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের।’’
খড়দহ ও পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যানদের বক্তব্য, আর্বজনা ফেলার সমস্যা তাদের কাছে মস্ত বড় যন্ত্রণাদায়ক। আবর্জনা ফেলার জায়গা থাকলেও ঘন বসতি গড়়ে ওঠার কারণে সেখানে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আধুনিক উপায়ে জঞ্জাল থেকে সার বানানোর উপায় ভাবা হচ্ছে। এর জন্য দরকারি যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়ে সরকারি প্রক্রিয়া চলছে। ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে জঞ্জাল-জটের মোকাবিলা করার চেষ্টা চলছে।
কামারহাটির আদর্শনগরের পাশেই এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জঞ্জালের পাহাড়। খোলা জায়গায় জঞ্জাল পোড়ানোয় বিষাক্ত ধোঁওয়া আর গন্ধে অসুস্থ হওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। জঞ্জাল-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আদর্শনগরের বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই তৈরি করেছেন গ্রিন নাগরিক ফোরাম। অপেক্ষা শুধু জঞ্জাল-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy