Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নারদে নির্দেশ কেডিরই: ম্যাথু

তৃণমূল সাংসদ কে ডি সিংহের নির্দেশেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতাদের একাংশের উপরে ‘স্টিং অপারেশন’ চালিয়েছিলেন বলে সিবিআইকে জানালেন ম্যাথু স্যামুয়েল।

ম্যাথু স্যামুয়েল

ম্যাথু স্যামুয়েল

প্রেমাংশু চৌধুরী ও শুভাশিস ঘটক
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

তৃণমূল সাংসদ কে ডি সিংহের নির্দেশেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতাদের একাংশের উপরে ‘স্টিং অপারেশন’ চালিয়েছিলেন বলে সিবিআইকে জানালেন ম্যাথু স্যামুয়েল।

নারদ নিউজের কর্ণধার এই দাবি আগেও করেছিলেন। আজ দিল্লিতে সিবিআইয়ের পাঁচ ঘণ্টা জেরায় যাবতীয় নথি-সহ একই কথা বলেছেন তিনি। ম্যাথু দাবি করেছেন, নারদ-ভিডিওতে যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁরা ছাড়া আরও এক তৃণমূল সাংসদকে তিনি আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। সাংসদের বাড়িতেই টাকা দেওয়া হয়। আইফোনের ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার ভিডিও রেকর্ডিং হয়নি। কিন্তু অডিও রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত বহাল রাখার পর আজ সংস্থার সদর দফতরে ম্যাথুকে ডাকা হয়। তদন্তকারী অফিসার পার্থ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দোতলার একটি ঘরে জেরা চলে। অসুস্থ ম্যাথুকে বিছানা, বালিশ, কুশন দেওয়া হয়। সেখানেই আধশোয়া হয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। মাঝে কফি-স্যান্ডউইচের বিরতিও ছিল। এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের পাওয়া নথি, ম্যাথুর হোটেলের বিল, বিমানের টিকিট থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে তাঁর বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হয়।

সিবিআই সূত্রের খবর, প্রথমেই জানতে চাওয়া হয়, কার নির্দেশে ‘স্টিং’ হয়েছিল? ম্যাথু জানান, কে ডি সিংহের নির্দেশে। প্রতিদিন কে ডি-কে সব রিপোর্ট করা হতো। তা মোবাইলের কল রেকর্ডে রয়েছে। কল ডিটেলসও রয়েছে। কোনও দিন কে ডি নিজেই মোবাইলে বা হোটেলের ল্যান্ডলাইনে ফোন করতেন। তাঁকে ই-মেলও করা হতো। কিন্তু পরে

কে ডি ওই গোপন ভিডিও প্রকাশে রাজি হননি। ম্যাথু তাই বন্ধুদের সাহায্যে নারদ-নিউজ ওয়েবসাইট তৈরি করে তা প্রকাশ করেন। ম্যাথুর দাবি, প্রথমে স্টিংয়ের বাজেট ধরা হয়েছিল ২০-২৫ লক্ষ টাকা। পরে আরও টাকা লেগেছে।

তৃণমূল নেতাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই ম্যাথু স্টিং-এর পরিকল্পনা করেছিলেন কি না, জানতে চায় সিবিআই। ম্যাথু যুক্তি দেন, তিনি প্রথমে মধ্যপ্রদেশ-হিমাচলের কথা ভেবেছিলেন। আগেও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তিনি স্টিং অপারেশন করেছেন বলে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ বাদ যায়। ছোট রাজ্য, বেশি হইচই হবে না বলে বাদ যায় হিমাচল। তৃণমূল নেতাদের ক্ষেত্রে শোরগোল বেশি হবে ভেবে তিনি কলকাতাকে বেছে নেন। স্টিং-এ কারা সাক্ষী ছিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে ম্যাথু জানান, রাজ্যের প্রাক্তন এক মন্ত্রীর মতো কিছু নেতার বাড়িতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন টাইগার মির্জা।

সিবিআই সূত্রের খবর, কিছু নির্দিষ্ট তথ্য ম্যাথুর থেকে চাওয়া হয়েছিল। যেমন, কোন নেতা কোথায় টাকা নিয়েছেন, বাড়িতে না অফিসে, বাড়ির কোন ঘরে। যেমন, রাজ্যের এক বর্তমান মন্ত্রী তাঁর কোন দফতরে টাকা নিয়েছিলেন, তা জিজ্ঞাসা করা হয়। জেরার পরে ম্যাথু অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কোথাও অস্পষ্টতা তৈরি হলে ফের ডাকা হবে বলে সিবিআই জানিয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE