জামিনে মুক্তির পরে দেবমাল্য বাগচী। ছবি: বরুণ দে।
ন’দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন আনন্দবাজারের সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচী। একই সঙ্গে জামিন পেলেন মামলায় আর এক অভিযুক্ত বাসন্তী দাসও। দু’জনকেই দু’হাজার টাকা করে বন্ড জমা রাখার নির্দেশ দিলেন মেদিনীপুর প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক উদয় রানা।
জামিনের ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া হয়েছে, যে এলাকায় অভিযোগকারী থাকেন, আগামী ১৪ দিন সেই সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় (অর্থাৎ খড়্গপুরে) দেবমাল্য এবং বাসন্তী ঢুকতে পারবেন না। এই সময়ের মধ্যে তাঁরা অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারবেন না। আজ, শুক্রবার তাঁদের ফের হাজিরা দিতে হবে আদালতে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের প্রতি অত্যাচার দমন আইনের ৩ (১) (আর) (এস) ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩৫৪বি, ৫০৯ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় গ্রেফতার করা হয় দেবমাল্য এবং বাসন্তীকে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, ৬ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে খড়্গপুরে দেবমাল্যের বাড়ি যায় পুলিশের একটি দল। এবং পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মেদিনীপুরের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে মামলাটি উঠলে তাঁকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
দেবমাল্য যত দিন জেলে ছিলেন, তত দিন বিভিন্ন স্তর থেকে প্রতিবাদ হয়েছে। দেবমাল্যের নিজের শহর খড়্গপুর তো বটেই, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আলিপুরদুয়ার, বেশ কিছু জেলায় জেলা, মহকুমা এবং কয়েকটি এলাকাভিত্তিক প্রেস ক্লাবের তরফে প্রতিবাদ জানানো হয়, মিছিলও হয়। নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চিঠি পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
প্রধান বিরোধী দলগুলিও দেবমাল্যকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী-সহ অনেকেই নানা ভাবে প্রতিবাদ জানান। কংগ্রেস পথে নামে। আজ, শুক্রবারও ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারে কংগ্রেসের তরফে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সেভ ডেমোক্র্যাসি, এপিডিআর-সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ জানিয়েছিল আদিবাসী সংগঠন আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। তাদের দাবি ছিল, এই আইনটির অপব্যবহার হচ্ছে।
সাংবাদিকদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও জানানো হয়েছিল বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। মামলা বিচারাধীন বলে জানিয়েও মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, ১৪ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার
ওই আদালতেই জামিনের আর্জি জানানো হয়। অভিযোগকারী আদালতে এসে জানান, অভিযুক্তেরা জামিন পেলে তাঁর আপত্তি নেই।
এর পর দেবমাল্যদের জামিন দেওয়া হয়।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমার প্রেস ক্লাব, বিভিন্ন দল ও সংগঠন এবং ব্যক্তিবিশেষ যাঁরা এই সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এ দিন জামিনের পরে তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে দেবমাল্যের পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy