Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

সব চাইলে কী করে হবে: মমতা

শুক্রবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মা, ‘‘একটা পরিবারকেই সব কিছু দিতে হবে, এটা সম্ভব নয়। সব প্রকল্পের সুবিধা পরিবারের সকলে পাবেন, এমনটা করলে চলবে না।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তাঁর কানে এসেছে অনেকেই অন্যায্য ভাবে প্রকল্পের সুবিধা চাইছেন।

পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই জঙ্গলমহলের জন্য উপুড়হস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক প্রকল্প, আরও বেশি মানুষকে সরকারি পরিষেবার আওতায় আনা আর সেই পরিষেবা দিতে বারবার নিজেই ছুটে আসা—কয়েক বছরে এই ছবিতেই অভ্যস্ত জঙ্গলমহল। কিন্তু এতে প্রত্যাশার বহর বাড়ছে আর তা সামাল দিতে তাঁর সরকার যে হিমসিম, এ বার সেই ইঙ্গিত মিলল মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভেই।

শুক্রবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মা, ‘‘একটা পরিবারকেই সব কিছু দিতে হবে, এটা সম্ভব নয়। সব প্রকল্পের সুবিধা পরিবারের সকলে পাবেন, এমনটা করলে চলবে না।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তাঁর কানে এসেছে অনেকেই অন্যায্য ভাবে প্রকল্পের সুবিধা চাইছেন। উদাহরণস্বরূপ তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সত্তর বছরের লোক বেকার ভাতা চাইছে, এটা তো ঠিক নয়।’’

প্রশাসনের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, খাদ্যসাথী, সবুজসাথী, যুবশ্রী, কন্যাশ্রীর মতো জঙ্গলমহলে চালু বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে উপভোক্তা বাছার যে মাপকাঠি রয়েছে, তাতে এক পরিবারের সকলে দাবিদার হতে পারেন ন্যায্য ভাবেই। কিন্তু এত লোককে পরিষেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে সরকার। অনেকে দাবিমতো পরিষেবা পাচ্ছেনও না। ফলে, ক্ষোভ ছড়াচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির বিষফল মুখ্যমন্ত্রী পেতে শুরু করেছেন। খুব দেরি নেই যে দিন সুবিধাপ্রাপকরাই ওঁর গাড়ি আটকাবেন।’’ ক্ষোভের আঁচ টের পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। বৃহস্পতিবার বেলপাহাড়ি থেকে ঝাড়গ্রাম ফেরার পথে নানা জায়গায় তাঁকে শুনতে হয়েছে— শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের স্বজনপোষণের জেরে প্রকৃত গরিব মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। সেই সূত্রে এ দিন দলের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “কান খুলে একটা কথা শুনে নিন। আমার পরিচিতজন বাড়ি পেল আর অন্যরা পেল না, আমার হাতে ক্ষমতা আছে তাই যা করব সেটাই হবে, এমন আচরণ আমি বরদাস্ত করব না। পরিষেবার ক্ষেত্রে রাম-শ্যামে বাছবিচার চলবে না।”

বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বংশীবদন মাহাতোকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তুমি তো আমলাশোলের বংশী। কেন তোমার এলাকার লোক বলবে বিধবা ভাতা পাইনি?’’ বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা, দুলাল মুর্মু, জেলা সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণমন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোর উদ্দেশেও মমতার বার্তা, “সব ঠিকঠাক হচ্ছে না।” এলাকায় ক্ষোভ আছে কিনা, কেউ গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে কিনা, বিডিও-দেরও সে দিকে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE