Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

বড়মার মৃত্যুতেও ঠাকুরবাড়ির কোন্দল প্রকাশ্যে

মঙ্গলবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান বীণাপাণিদেবী। এর পরই সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বীণাপাণিদেবীর ছোট নাতি, বিজেপি ঘনিষ্ঠ শান্তনু ঠাকুর অভিযোগ করেন, বড়মার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়।

এসএসকেএম থেকে বার করা হচ্ছে বড়মার দেহ। নিজস্ব চিত্র

এসএসকেএম থেকে বার করা হচ্ছে বড়মার দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩৭
Share: Save:

শুরুটা হয়েছিল বছর পাঁচেক আগে। অনেক চেষ্টাতেও মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ির ঘরোয়া কোন্দল রোখা যায়নি। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপাণি ঠাকুরের (বড়মা) মৃত্যুতেও ফের তা প্রকাশ্যে এল।

মঙ্গলবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান বীণাপাণিদেবী। এর পরই সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বীণাপাণিদেবীর ছোট নাতি, বিজেপি ঘনিষ্ঠ শান্তনু ঠাকুর অভিযোগ করেন, বড়মার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তাঁর দাবি, ‘‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে বড়মাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সিবিআই তদন্ত চাইছি।’’ অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন শান্তনুর জেঠিমা, বীণাপাণিদেবীর বড় পুত্রবধূ তথা বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর। মমতার দাবি, ‘‘শান্তনুর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। গত এগারো বছরে বড়মা যতবার অসুস্থ হন, আমিই হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওঁরা খোঁজও নেননি।’’ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘বড়মার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছিল। প্রয়োজনে ইন্টারপোল তদন্ত করুক।’’

বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে শববাহী গাড়িতে বীণাপাণিদেবীর মরদেহ গাইঘাটায় ঠাকুরবাড়িতে আনা হয়। ভোর থেকেই উপচে পড়ছিল ভক্তদের ভিড়। তার মধ্যেও ওই পরিবারের কোন্দল নিয়ে চর্চা চলেছে সমানতালে। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে বীণাপাণিদেবীর বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ তৃণমূল প্রার্থী হন। মানতে পারেননি ছোট ছেলে, তথা রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ। শুরু হয় দুই ভাইয়ের পরিবারের কোন্দল। এর মধ্যে কপিলকৃষ্ণ মারা গিয়েছেন। মতুয়া মহাসঙ্ঘ দু’ভাগ হয়েছে। মঞ্জুলকৃষ্ণের পরিবার বিজেপি ঘেঁষা হয়েছে। ফাটল আরও চওড়া হয়েছে।

এ দিন সকাল থেকে ঠাকুরবাড়ি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সঞ্জয় সিংহের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী হাজির ছিল। বড়মার দেহ এনে রাখা হয় নাটমন্দিরের অস্থায়ী বেদিতে। সেখানেই সকলে শ্রদ্ধা জানান। তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসুরা সারা ক্ষণই ঠাকুরবাড়িতে ছিলেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষের নেতৃত্বে বামেদের একটি প্রতিনিধি দলও আসে। আসেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং রাহুল সিংহও। মুকুল বলেন, ‘‘বড়মার মৃত্যু মতুয়াদের কাছে মহীরুহ পতন। তবে তিনি কিছুটা শান্তি পেয়েছেন মৃত্যুর আগে। কারণ, উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবিতে বড়মা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। তাঁর সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। সেটা তিনি জেনে যেতে পেরেছেন।’’ জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘বড়মার মৃত্যু আমাদের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। ওঁর আশীর্বাদ সব সময় আমাদের সঙ্গে ছিল।’’ আজ, বৃহস্পতিবার বীণাপাণিদেবীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Baroma Death Matua Binapani De Baroma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE