শুভ্রাংশু রায়
চতুর্থী থেকেই শুরু হয়েছিল ব্যস্ততা। পঞ্চমীতে পুজো উদ্বোধনের ঠাসা কর্মসূচি। যতই হোক এলাকার বিধায়ক বলে কথা। সোমবার খবরটা যখন এল, বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় তখন উদ্বোধন নিয়েই ব্যস্ত।
পরিচিতেরা জানাচ্ছেন, সামান্য নীরবতা ছাড়া বিশেষ বিচলিত দেখায়নি মুকুল পুত্রকে। মুকুল রায়ের দল ছাড়ার খবরের পরে যিনি সটান জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব।’’ তাঁর নেত্রী যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের সে কথাও জানাতে ভুলছেন না শুভ্রাংশু।
শুভ্রাংশু যাই বলুন, তাঁর নিজের শহর কাঁচরাপাড়া এবং জেলা উত্তর ২৪ পরগনার দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, মুকুলের সঙ্গে অন্যায় করল দল। আরও সম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘অনেক বাধ্যবাধকতার কারণে হয়তো আমরা এখনই দাদার সঙ্গে যেতে পারব না। তবে সময়ে অনেক কিছুই বদলাতে পারে।’’ এ কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের কয়েকজন দলের পদাধিকারীর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিও।
আরও পড়ুন: সাসপেন্ড হচ্ছেন খবর পেয়েই তৃণমূল ছাড়লেন মুকুল রায়
মুকুলের দল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জল্পনা শুরু হয়, শুভ্রাংশু কী করবেন? এর আগে দলের সঙ্গে মুকুলের যখন দূরত্ব তৈরি হয়, তখন বাবার পক্ষে কথা বলে দু’জনেরই বিড়ম্বনা বাড়ান শুভ্রাংশু। আগের তুলনায় এখন অনেক পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ শুভ্রাংশু। স্বাভাবিকভাবে এ বার সাবধানী তিনি। বলছেন, ‘‘বাবা তাঁর মতো রাজনীতি করবেন, আমি করব আমার মতো।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘একটা মানুষের দু’টো সত্তা থাকে। আমি যেমন বাবার ছেলে, তেমন দলের টিকিটে নির্বাচিত বিধায়কও তো।’’ শুভ্রাংশু জানান, গত দু’দিনে বাবার সঙ্গে তাঁর কথাই হয়নি। দলে মুকুলের থাকা, না থাকা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া নেই। দল থেকে মুকুল বিতাড়ন নিয়েও কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
মঙ্গলবার রাতেই মুকুলের কাঁচরাপাড়া পৌঁছনোর কথা। এক ছাদের নীচে অস্বস্তি হবে না? শুভ্রাংশু মুলায়ম সিংহ যাদব এবং অখিলেশের উদাহরণ দিচ্ছেন। বলছেন, ‘‘পুজো নিয়ে আলোচনা তো হতেই পারে। তবে রাজনীতি নিয়ে হবে না।’’
এক সময় যাঁদের হাতে করে দলে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন, কাঁচরাপাড়ার তৃণমূলের সেই নেতা-কর্মীরা মুকুলের পাশেই থাকছেন। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘আমাদের দুঃসময়ে, দলের দুঃসময়ে দাদা পাশে ছিলেন। এখন তাঁর পাশে থাকা আমাদের কর্তব্য।’’ কাঁচরাপাড়ায় থাকলে মুকুল বাড়ির পাশে দলেরই ওয়ার্ড অফিসে বসেন। মাঝে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার পরে সেখানে বসা বন্ধ করেছিলেন। বসতেন, তার উল্টো দিকের একটি ঘরে। মঙ্গলবার থেকে সেই ঘর ফের সাফসুতরো করা শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy