পুর নির্বাচন কবে হবে তার দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। অন্যদিকে মেয়াদ শেষ পুরনো বোর্ডের। ফলে সেই বোর্ডের কাউন্সিলরদেরও কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক এই জটিলতায় আটকে গিয়েছে উলুবেড়িয়া পুর এলাকার ২৯টি ওয়ার্ডের বহু উন্নয়নমূলক কাজ। শুধু উন্নয়নমূলক কাজই নয়, পুরসভায় প্রতিদিন নানা দরকারে আসা মানুষজনকেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
যদিও নিয়মানুযায়ী পুরসভার প্রশাসনিক কাজ সামলানোর দায়িত্ব দিয়ে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসককে। কিন্তু সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পুরকর্মীদেরও অভিযোগ, তা সত্ত্বেও যথাযথ ভাবে কাজ হচ্ছে না। যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে পুরবাসীকে। তবে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য কতে চাননি মহকুমাশাসক নিখিল নন্দন।
১৯৮২ সালে পুরসভা গঠিত হলেও পুর পরিষেবার ক্ষেত্রে উলুবেড়িয়া নানা সমস্যায় জর্জরিত। পরিস্রুত পানীয় জল থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট নিকাশির যথাযথ উন্নতি হয়নি। যদিও গত কয়েক বছরে পুর কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছিলেন। কয়েকশো কোটি টাকা ব্যয় করে পুর এলাকায় জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছে। সেই জলপ্রকল্প থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।
অভিযোগ, অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের মাধ্যমে পুর প্রশাসন যথাযথ ভাবে কাজ করতে পারছে না। ফলে বহু কাজ থমকে গিয়েছে, নয়তো ধীর গতিতে হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ৮, ১২, ১৫, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড-সহ ১১টি ওয়ার্ডে দরিদ্রদের বাড়ি তৈরির কাজে সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদারদের দাবি, তারা হিসাবপত্র জমা দিলেও বিল পাশ হচ্ছে না। ফলে তাঁরা টাকার অভাবে কাজ করতে পারছেন না। কোথাও বাড়ির লিন্টন পর্যন্ত হয়ে কাজ আটকে আছে। কোথাও বাড়ি তৈরি হলেও শৌচাগারের কাজ বাকি রয়ে গেছে। ফলে উপভোক্তারা সমস্যায় পড়েছেন। এ ছাড়া পুজোর আগে প্রতি বছরই পুর এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়। কিন্তু এই অবস্থায় তা হবে কিনা তাতেও সংশয় দেখা দিয়েছে।
নিকাশি উলুবেড়িয়ার অন্যতম প্রধান সমস্যা। সেই কাজও যেমন ঠিকমতো হচ্ছে না, তেমনইও সাফাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও ঠিক মতো হচ্ছে না বলে পুরবাসীর অভিযোগ। পুরসভার সাফাই কর্মীদের অভিযোগ, গত মাসে কাজ করার পরেও টাকা পাচ্ছেন না তাঁরা। এমনই এক সাফাই কর্মী অশোক নায়েক জানালেন, “হাজার তিনেক টাকা পাব। সেটাও পাচ্ছি না।”
বর্তমানে পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ড। জনসংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ পুরসভায় আসছেন কিন্তু কোনও পরিষেবা পাচ্ছে না। একটা শংসাপত্র পেতে এক সপ্তাহ থেকে দশ দিন লেগে যাচ্ছে।
চেঙ্গাইলের সামুই পাড়ার বাসিন্দা ও উলুবেড়িয়া কলেজের ছাত্র দুধকুমার বাগ, সুভাষ প্রামাণিক স্কলারশিপের জন্য শংসাপত্র নিতে এসেছিলেন পুরসভায়। কিন্তু শংসাপত্র না নিয়েই ফিরে যেতে হয় তাঁদের। দু’জনেই জানান, এক সপ্তাহ পরে খোঁজ নিতে বলেছে। বার বার কলেজ কামাই করে আসা নিয়েও সমস্যা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy