তৃণমূল সদস্যদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে হুগলি জেলা পরিষদে। তা রুখতে সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয় রেখে জেলা পরিষদ চালানোর ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিলেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
সভাধিপতি মেহবুব রহমানের কাজকর্ম নিয়ে কিছু সদস্যের অসন্তোষের প্রেক্ষিতে দলের মনিটরিং কমিটির ডাকে রবিবার বিকেলে চুঁচুড়ার কৃষি ভবনে বৈঠক হয়। তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের সাধারণ সভা রয়েছে। সেই বৈঠকে সদস্যদের সঙ্গে সভাধিপতির কোন্দলের আঁচ যাতে না পড়ে, সেই কারণেই এ দিনের বৈঠকে সমন্বয় রেখে কাজে জোর দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত। তিনি পরে বলেন, “সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।” সভাধিপতি অবশ্য বৈঠক নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত বছর জেলা পরিষদের বর্তমান বোর্ড গঠনের পর থেকেই সভাধিপতির সঙ্গে অধিকাংশ দলীয় সদস্যের বনিবনা হচ্ছিল না। জেলা পরিষদের ৫০টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের হাতে রয়েছে ৪৬টি। কিন্তু সভাধিপতি মুষ্টিমেয় কয়েক জনকে নিয়ে ‘একতরফা’ ভাবে কাজ করছেন এবং কাজের সমবণ্টন হচ্ছে না বলে অনেকে অভিযোগ তোলেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গড়ায় যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ‘সুবিচার’ চেয়ে চিঠি লেখেন ৩২ জন তৃণমূল সদস্য। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অস্বস্তিতে পড়েন।
এ দিনের বৈঠকে তপনবাবু ছাড়াও ছিলেন দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব, মন্ত্রী বেচারাম মান্না, রচপাল সিংহ, পরিষদীয় সচিব অসীমা পাত্র। সভাধিপতি, উপাধ্যক্ষ সমীরণ মিত্র-সহ জেলা পরিষদের অন্য তৃণমূল সদস্যেরাও ছিলেন। বৈঠকে সদস্যদের অনেকেই জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সিঙ্গুর ব্লক থেকে নির্বাচিত সভাধিপতির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এক কর্মাধ্যক্ষের কাজকর্ম নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন কিছু সদস্য। ঘণ্টা তিনেকের ওই বৈঠকে জেলার শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এমন কোনও কাজ করা যাবে না, যাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আগামী ২৯ নভেম্বর ফের বৈঠক হবে বলে স্থির হয়েছে। দিলীপবাবু জানান, উন্নয়ন নিয়ে তাঁরা বারবার আলোচনা করেন। এ দিনও তাই হয়েছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর দলের পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে ‘পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলন’ হবে বলে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy