ক্যাম্পাসের বাইরে ঝুলছে টিএমসিপি-র পতাকা। কাঁচা হাতে লেখা একটি পোস্টার সেটি আড়াল করতে মরিয়া।
আদতে এটাই হাওড়ার অধিকাংশ কলেজের ছবি।
রাজ্যে টিএমসিপি-র উত্থান ডোমজুড় আজাদ হিন্দ ফৌজ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে। ১৯৯৮ সাল থেকে কলেজের ছাত্র সংসদ শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দখলে। মধ্য গগনের বাম আমলেও ওই কলেজে পা ফেলতে পারেনি এসএফআই। গত নির্বাচনে একটা লনাই হয়েছিল ঠিকই তবে তা টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই।
এ বার সেই ছবিটাই ভদলে গিয়েছে যেন। ইতিমধ্যেই কলেজে এবিভিপি-টিএমসিপি হাতাহাতি হয়েছে বার কয়েক। ডোমজুড় কলেজে এবিভিপি-র ভেসে ওঠা একটা উদাহরণ মাত্র। হাওড়া জুড়ে ছবিটা প্রায় একইরকম। টিএমসিপি-র অন্দরের খবর, বেশ কিছু কলেজেই পতাকা, পোস্টার নিদেনপক্ষে পদ্ম-সমর্থকদের ভিড় নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে দলের ছাত্র সংগঠন।
ছাত্র সংসদের গত নির্বাচনেও অবশ্য বিক্ষিপ্ত কয়েকটি আসন ছাড়া এবিভিপি-র তেমন অস্তিত্ব ছিল না। জেলার ২১টি কলেজেই ছাত্র সংসদ টিএমসিপি-র দখলে। লোকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত শুধু আন্দুলের প্রভু জগদ্বন্ধু কলেজে এবিভিপি তাদের ইউনিট খুলতে পেরেছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের পরেই ছবিটা বদলে যেতে শুরু করে। আমতা রামসদয় কলেজ, ডোমজুড় আজাদ হিন্দ, জগৎবল্লভপুর শোভারানি মেমারিয়াল, কানাইলাল ভট্টাচার্য কলেজ, হাওড়া গালর্স কলেজ, বালি লালবাবা কলেজ ও নরসিংহ দত্ত কলেজে ইউনিট খুলতে না পারলেও োই সব কলেজে যে তাদের প্রতিপত্তি ক্রমেই বেড়েছে তা টিএমসিপি এবং অন্য ছাত্র সংগঠনগুলিও কবুল করেছে। এবিভিপির হাওড়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুদীপ দেবনাথের দাবি, “হাওড়া জেলায় স্কুল ও কলেজে আমাদের অন্তত ছ’ হাজার সদস্য রয়েছে। কিন্তু সেই ভয়েই টিএমসিপি আমাদের মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেবে বলেই আমাদের আশঙ্কা।” কিন্তু তাকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কি বিজেপি-র ছাত্র সংগঠনের আছে? সে ব্যাপারে প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
তবে তাদের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কলেজে গন্ডগোলের জেরে তা প্রমাণিত। দিন কয়েক আগে আমতা রামসদয় কলেজে এক এবিভিপি সমর্থককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপির বিরুদ্ধে। ডোমজুড় কলেজের এবিভিপি কর্মীদের মারধরের অভিযুক্ত খোদ তৃণমূল। মুখে অবশ্য জেলা-এবিভিপি’কে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না তৃণমূল। প্রাক্তন জেলা টিএমসিপি সভাপতি তথা ডোমজুড়ের তৃণমূল নেতা অনুপম ঘোষ ও টিএমসিপির বর্তমান জেলা সভাপতি তুষার ঘোষের দাবি, “এবিভিপি বলে কিছু নেই। ওটা সংবাদ মাধ্যমের অপপ্রচার।”
এবিভিপি যখন জেলায় নিজেদের অস্তিত্ব বাড়াতে তৎপর, তখন তুলনায় অনেকটাই নিস্প্রভ এসএফআই ও ছাত্র পরিষদ। ২০১০ সাল পর্যন্ত জেলার বেশিরভাগ কলেজ ছিল এসএফআইয়ের দখলে। কিন্তু বর্তমানে ক্যাম্পাসের লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে তারা। এসএফআইয়ের জেলা কমিটির সদস্য উষ্ণীষ সিংহ রায়ের অবশ্য দাবি, “স্বচ্ছ ভোট হলে বেশিরভাগ কলেজে আমরাই জিতব।” জেলা ছাত্র পরিষদ নেতা শুভ্রজ্যোতি দাসের আশঙ্কার মধ্যেই অবশ্য তাঁদের সীমাবদ্ধতার কথা স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “শোভারানি মেমোরিয়াল, প্রভু জগদ্বন্দ্বু, গঙ্গাধরপুর কলেজ ও নরসিংহ দত্ত কলেজে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তৃণমূল ভোট করতে দেবে বলে মনে হয় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy