ধুলাগড়ে আন্ডারপাশের নীচে বসেছে দোকানপাট। — সুব্রত জানা
ধুলাগড়ি আন্ডারপাসের নীচে রমরমিয়ে সরোজ জানার চায়ের গুমটি। শুধু সরোজবাবুর চায়ের গুমটিই নয়, আন্ডারপাসের নীচে রয়েছে কাপড়ের দোকান, জুতোর দোকান, ফলের দোকানও। সব মিলিয়ে আস্ত একটি বাজার। উপরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে দ্রুতগতিতে চলাচল করছে গাড়ি, লরি, ট্রাক-ট্রেলার। নীচে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় লেগে আছে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার কলকাতার গণেশ টকিজে নির্মীয়মাণ উড়াল সেতুর নীচটাও ছিল এইরকমই জমজমাট। কিন্তু আচমকা সেতু ভেঙে পড়ার ফলে বিপর্যয় হয়। সেতুর নীচে চাপা পড়ে মারা যান অনেকে।
এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ধুলাগড়িতে আন্ডারপাসের নীচে নিত্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকা দোকানদার এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তথা মুম্বই রোডকে ছয় লেনে পরিণত করার পরিকল্পনা হিসাবে আলমপুর, ধুলাগড়ি, দেউলটি প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তৈরি হয়েছে আন্ডারপাস। যার নীচ দিয়ে পথচারি, স্থানীয় রুটের বাস ও গাড়ি চলাচল করে। রানিহাটি, পাঁচলা মোড়, উলুবেড়িয়া, বাগনান প্রভৃতি গুরুত্বপুর্ণ মোড়েও আন্ডারপাস তৈরির পরিকল্পনা আছে বলে জানান জাতীয় সড়ক সংস্থার এক পদস্থ আধিকারিক।
ইতিমধ্যে যেগুলি তৈরি হয়েছে সেই ধুলাগড়ি, আলমপুর, দেউলটিতে দেখা গেল সবকটির নীচেই বিকিকিনির হাট। ক্রেতা-বিক্রেতারভিড়ে জমজমাট। বিবেকানন্দ রোডে নির্মীয়মাণ উড়ালসেতু ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে ধুলাগড়ি আন্ডারপাসের নীচে চায়ের দোকানি সরোজবাবু বলেন, ‘‘এমন দুর্ঘটনার কথা শুনে ভয় তো পাচ্ছিই। কখন কী ঘটে বলা যায়! কিন্তু কী বা করার আছে। এই দোকান থেকেই সংসার চলে। উঠে যেতে তো পারি না।’’ সরোজবাবুর দোকানের পাশেই ফলের দোকান শেখ জাহাঙ্গিরের। একই বক্তব্য তাঁরও।
তবে আন্ডারপাসগুলি পুরোপুরি নিরাপদ বলেই জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক সংস্থার কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, আন্ডারপাসগুলি ঢালাই করার পরে কতটা ওজন তারা নিতে পরে তার হিসাব করে তবেই গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, এই পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ নিয়মিতই চলে, যাতে বিপর্যয়ের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা থাকলে তা আগেভাবে দূর করা যায়। জাতীয় সড়ক সংস্থার এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার জানান, শুধু ঠিকা সংস্থার উপরে সব দায়িত্ব তাঁরা ছেড়ে দেন না। দু’টি স্তম্ভের মাঝখানের অংশে যে কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে জোড়া হয় ঢালাইয়ের আগে তার ওজন পরিমাপ করার কাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য প্রতিটি ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে ঠিকা সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে তাঁরাও হাজির থাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy