অপচয়: এই সাইকেলই বিলির কথা। নিজস্ব চিত্র
ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাজ্য সরকারের ‘সবুজসাথী’ প্রকল্প। যে প্রকল্পে স্কুল পড়ুয়াদের সাইকেল দেওয়া হয়। কিন্তু চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়ের মাঠে, আকাশের নীচে ১৩ মাস ধরে অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে প্রকল্পের কয়েকশো সাইকেল!
খোলা চোখেই দেখা যাচ্ছে, বহু সাইকেলের চাকায় হাওয়া নেই। হ্যান্ডেল বেঁকে গিয়েছে। স্ট্যান্ড ঢুকে গিয়েছে। ব্রেক ঝুলে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গর্বের এই প্রকল্পের এমন হাল কী করে হল তা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি প্রশাসন বা পুরসভার কর্তারা। তবে, এখন তাঁরা আশ্বাস দিচ্ছেন সাইকেলগুলি দ্রুত বিলি করার। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ওই সাইকেল কী অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গ বিদ্যালয়-সহ চন্দননগরের কয়েকটি স্কুলের জন্য ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে প্রায় এক হাজার সাইকেল আসে। সেগুলি বঙ্গ বিদ্যালয়ের মাঠেই রাখা হয়। কিছুদিন পরে বঙ্গ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৩২৬টি বিলি হয়। অন্য একটি স্কুলেও কিছু সাইকেল যায়। কিন্তু তারপর থেকেই পড়ে রয়েছে কয়েকশো সাইকেল।
কেন?
কারণ জানেন না বঙ্গ বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ রবীন্দ্রনাথ ঘোষাল। তিনি বলেন, ‘‘সাইকেলগুলি রাখার জন্য আমাদের স্কুলের মাঠ নেওয়া হয়। কিন্তু কেন সাইকেলগুলি বিল হয়নি বলতে পারব না।’’ স্কুলটি পুরসভা পরিচালিত। চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কী কারণে সাইকেলগুলি পড়ে রয়েছে সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি।’’ প্রায় একই রকম অন্ধকারে জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল এবং চন্দননগরের মহকুমাশাসক সানা আখতার।
কিন্তু প্রশাসনেরই একাংশের দাবি, সাইকেল বিলির বিষয়টি দেখভাল করে মহকুমা প্রশাসন। কাজেই কোন স্কুলে কত সাইকেল কবে পাঠানো হবে, সে ব্যাপারে মহকুমা প্রশাসনেরই জানা কথা। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘খোলা আকাশের নীচে সাইকেলগুলি পড়ে রয়েছে, এ কথা আমি জানি না। অবিলম্বে বিলি করার ব্যবস্থা করছি। কোনও সাইকেল খারাপ হয়ে থাকলে মেরামত করেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
বঙ্গ বিদ্যালয়ের এক ছাত্র জানিয়েছে, নতুন সাইকেল হাতে পাওয়ার পরেও তাকে নিজের খরচে কিছু মেরামত করাতে হয়েছে। তাই, রোদে-জলে ১৩ মাস ধরে পড়ে থাকা সাইকেল আদৌ কতটা মেরামতযোগ্য থাকবে, সে প্রশ্ন থাকছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy