ঐতিহ্য: ব্যান্ডেল চার্চ ও ইমামবাড়া। ফাইল ছবি
রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে হুগলির ব্যান্ডেল চার্চ এবং ইমামবাড়াকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে রোপওয়েতে জোড়ার সিদ্ধান্ত নিল হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভা। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে পুর কর্তৃপক্ষের আশা।
পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় জানান, বারো মাস ওই দুই জায়গায় দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক আসেন। রোপওয়ে তৈরি হলে এই দু’জায়গার আকর্ষণ অনেক বেড়ে যাবে। নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে যত শীঘ্র সম্ভব প্রকল্পের কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বর্তমানে পর্যটকেরা হয় সড়কপথে, না হয় গঙ্গায় নৌকা করে ওই দু’জায়গার মধ্যেযাতায়াত করেন। নতুন প্রকল্পটি হয়ে যাতায়াতের আর একটি পথ খুলবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যান্ডেল চার্চ এবং ইমামবাড়া— গঙ্গার ধার বরাবর প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ ২২ ফুট উঁচুতে রোপওয়েতে জুড়বে কলকাতার একটি সংস্থা। হুগলি চকবাজার পার্কে একটি হল্ট স্টেশন হবে। প্রকল্পটি তৈরি করতে খরচ হবে ৯৮ কোটি টাকা। তবে এতে পুরসভা বা পর্যটন দফতরের কোনও খরচ হবে না। পুরো খরচ করবে নির্মাণকারী সংস্থাই। রোপওয়ে চালু হলে আয়ের ৭৫ শতাংশ নেবে তারা। বাকি ২৫ শতাংশ পাবে পুরসভা।
পুরকর্তারা জানান, তাঁদের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে কয়েক মাস আগে নিজেদের ওয়েবসাইটে রোপওয়ে নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে আবেদন করতে বলা হয়। তাতে কলকাতার সংস্থাটি সাড়া দেয়। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। যে পথে রোপওয়ে চলবে, তা সম্প্রতি পরিদর্শন করে গিয়েছেন ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা। মাটি পরীক্ষাও করা হয়েছে। জমি জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। নির্মাণের সময় ওই পথে যান চলাচলের কোনও অসুবিধা হবে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
নির্মাণকারী সংস্থাটি এর আগে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি এলাকায় রোপওয়ে চালু করেছে। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘ব্যান্ডেল চার্চ এবং ইমামবাড়ার ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। তাই পুরসভার প্রস্তাবে আমরা সাড়া দিয়েছি। সব দিক খতিয়ে দেখেই পুরসভার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। আশা করছি, পর্যটকেরা বাড়তি আনন্দ পাবেন।’’
শহরের সাজে নতুন পালক যুক্ত হবে শুনে খুশি বাসিন্দারা। অবশ্য নিরাপত্তার দিকটিও যাতে গুরুত্ব পায়, সেই দাবিও তুলেছেন তাঁরা। চুঁচুড়ার বাসিন্দা শ্যামলী বসু বলেন, ‘‘অনেক জায়গায় বেড়াতে গিয়ে রোপওয়ে চড়েছি। কিন্তু ঘরের সামনে রোপওয়ে! ভাবতেই দারুণ লাগছে। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এ শহরের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে।’’ অনিমেষ চক্রবর্তী নামে আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমি বেড়াতে ভালবাসি। আমার শহরেই রোপওয়ে হচ্ছে শুনে খুব আনন্দ হচ্ছে। নজরদারিতে যেন কোনও খামতি না-থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy