Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

তিন যুবকের চেষ্টায় বাড়ির পথে বৃদ্ধ 

সম্প্রতি কোন্নগরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যেরা খবর পান, নবগ্রামে রাস্তার ধারে এক বৃদ্ধ পড়ে রয়েছেন। রাত ১০টা নাগাদ সংস্থার সদস্য সুভাষ দাস, পরীক্ষিৎ সমাজপতি, সন্তু দাস সেখানে যান। বৃদ্ধ তখন শীতে কাঁপছেন।

ফেরা: বাড়ির পথে অনিলবাবু। নিজস্ব চিত্র

ফেরা: বাড়ির পথে অনিলবাবু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

মুখে হাসি যেন ধরছিল না বৃদ্ধের। আনন্দে ছেলেগুলোর হাত চেপে ধরছিলেন। তাদের জন্যই তো মাস দু’য়েক পরে বাড়ির পথ ধরলেন অনিল দাস। বছর সত্তরের বৃদ্ধে বাড়ি ত্রিপুরার রাঙামাটিতে।
সম্প্রতি কোন্নগরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যেরা খবর পান, নবগ্রামে রাস্তার ধারে এক বৃদ্ধ পড়ে রয়েছেন। রাত ১০টা নাগাদ সংস্থার সদস্য সুভাষ দাস, পরীক্ষিৎ সমাজপতি, সন্তু দাস সেখানে যান। বৃদ্ধ তখন শীতে কাঁপছেন। পরনে গামছা আর একটা জামা। কথা বলতে পারছিলেন না। গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেন ওই যুবকেরা। এর পরে কানাইপুর ফাঁড়ির পুলিশের সহায়তায় ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পর দিন সকালে বৃদ্ধ কিছুটা সুস্থ হন। জানান, ত্রিপুরার রাঙামাটি থেকে একটি দলের সঙ্গে কলকাতায় ঘুরতে এসেছিলেন। তিনি দলের রাঁধুনি। এখানে এসে কোনও ভাবে দলছুট হয়ে পড়েন। এরপরে রাস্তাতেই দিন কাটছিল। দিন কয়েক আগে কোনও ভাবে কোন্নগরে চলে আসেন। ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর মুখে সব শুনে সুভাষরা ইন্টারনেট ঘেঁটে শুরু করেন খোঁজ। রাঙামাটির কিছু জায়গা দেখে বৃদ্ধ চিনতে পারেন। এর পরে তাঁরা স্থানীয় বীরগঞ্জ থানার ফোন নম্বর জোগাড় করে সেখানে কথা বলেন। হোয়াটসঅ্যাপে বৃদ্ধের ছবি পাঠিয়ে দেন থানায়। পুলিশ তাঁর ছেলে সঞ্জিতকে খুঁজে বের করে। কয়েক দিন শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর হাসপাতালই ছিল ওই বৃদ্ধের ঠিকানা। সঞ্জিত বাবাকে সেখান থেকে নিয়ে যান। সঞ্জিত বলেন, ‘‘দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ফিরে পেয়ে খুব ভাল লাগছে। পুলিশ এবং স্থানীয় যুবকদের উপরে আমি কৃতজ্ঞ।’’ আর অনিলের কথায়, ‘‘ছেলেগুলোর জন্যই ফিরতে পারছি।’’ সুভাষ-সন্তু-পরীক্ষিৎরাও খুশি। হারানো বাবাকে ছেলের হাতে তুলে দিতে পেরে আনন্দে ভাসছেন তাঁরাও।

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura Uttarpara Volunteer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE