বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শিক্ষাবন্ধু এবং পার্শ্বশিক্ষকেরা।—নিজস্ব চিত্র।
কাজ করছেন সরকারি নিয়ম মেনে। কেউ স্থায়ী শিক্ষকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। কেউ বা অন্য কাজ করছেন। কিন্তু হাতে পাননি নিয়োগপত্র। এমনই অবস্থা হুগলি জেলার শিক্ষাবন্ধু এবং পার্শ্বশিক্ষকদের। অবিলম্বে নিয়োগপত্র দেওয়া এবং স্থায়ীকরণের দাবীতে বুধবার চুঁচুড়ায় সর্বশিক্ষা মিশন দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। দফতরের আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হল। নিখিলবঙ্গ পার্শ্বশিক্ষক সমিতি এবং নিখিলবঙ্গ শিক্ষাবন্ধু সমিতির নেতৃত্বে ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এই জেলায় ২৬৮ জন শিক্ষাবন্ধু আছেন। পার্শ্বশিক্ষের সংখ্যা দু’হাজারের বেশি। তাদের বক্তব্য, ২০০৬ সাল থেকে তাঁদের দিয়ে বিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ করানো হচ্ছে। পার্শ্বশিক্ষকরা পুরোদস্তুর ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষাবন্ধুরা অন্যান্য কাজ সামলাচ্ছেন। কিন্তু এত দিন পরেও তাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এই রাজ্যে শুধুমাত্র হুগলি এবং পুরুলিয়াতেই শিক্ষাবন্ধু এবং পার্শ্বশিক্ষকদের সঙ্গে এমন বঞ্চনা করা হচ্ছে।
সর্বশিক্ষা মিশন দফতর সূত্রের খবর, ২০১০ সালে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষাবন্ধুদের চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতর শিক্ষাবন্ধুদের কাছ থেকে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু হুগলির শিক্ষাবন্ধুদের ভাগ্যে শিঁকে ছেঁড়েনি।
আন্দোলনকারীরা জানান, আগে পার্শ্বশিক্ষকদের সাম্মানিক হিসাবে ১০০০ টাকা দেওয়া হত। ২০১০ সালে তা বেড়ে হয় ৫৪০০ টাকা। শিক্ষাবন্ধুরা পান ২০০০ টাকা। কিন্তু গত পাঁচ বছরে ওই টাকা বাড়ানো হয়নি। কয়েক দিন পরেই বিএড প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে হবে পার্শ্বশিক্ষকদের। কিন্তু নিয়োগপত্র না পেলে স্বভাবতই এই জেলার পার্শ্বশিক্ষকরা তা পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নিয়োগপত্র দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হন তাঁরা।
এ দিন প্রায় দু’শো পার্শ্বশিক্ষক ও শিক্ষাবন্ধু চুঁচুড়ায় জেলা পরিষদ ভবনে সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্প আধিকারিকের দফতরে জড়ো হন। নিখিলবঙ্গ শিক্ষাবন্ধু সমিতির জেলা কমিটির সদস্য কৌশিক চট্ট্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী কারণে নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে না, বোধগম্য হচ্ছে না। এটা সরকারের প্রহসন।’’ নিখিলবঙ্গ পার্শ্বশিক্ষক সমিতির সম্পাদক মলয় পাল বলেন, ‘‘অবিলম্বে নিয়োগপত্র না দিলে পার্শ্বশিক্ষকদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ হয়ে পড়বে। দ্রুত এই সমস্যা মেটানো হোক।’’
জেলা সর্বশিক্ষা প্রকল্প আধিকারিক অরূপ দত্তের বক্তব্য, ‘‘সকলের নামই রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে নিয়োগপত্র এসে না পৌছনোয় তা দেওয়া যাচ্ছে না। সেগুলি এসে পৌছলেই যত দ্রুত সম্ভব, সকলের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy