প্রিয়জিৎ কুমার
কর্মস্থল থেকে সহকর্মীর বিয়েতে যাওয়ার কথা বলে শনিবার সন্ধ্যায় মাকে ফোন করেছিলেন ধনেখালির ভাণ্ডারহাটির এক যুবক। গভীর রাতে তাঁর দেহ মিলল পাতিপুকুর রেল স্টেশনের কাছে আপ লাইনের ধারে।
প্রিয়জিৎ কুমার (২৩) নামে ওই যুবক রাজারহাটের একটি শপিং মলের রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। দুর্গানগরে এক মহিলার বাড়িতে ‘পেয়িং গেস্ট’ হিসেবে থাকতেন। তাঁকে খুন করা হয়েছে এবং খুনের পিছনে ওই মহিলা জড়িত সন্দেহে দমদম রেল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন প্রিয়জিতের বাবা তরুণ কুমার। প্রিয়জিতের মা জ্যোৎস্নাদেবী আবার ছেলের কিছু সহকর্মীর প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
দমদম রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে রেল লাইনে দেহ পড়ে থাকার কথা (নক ডাউন বার্তা) রেলের তরফেই তাদের জানানো হয়। যুবকের মাথায়, মুখে এবং পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে তিনি পাতিপুকুরে এসেছিলেন এবং তাঁর মোবাইলের ‘কল-লিস্ট’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসআরপি (শিয়ালদহ) দেবাশিস বেজ বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই মহিলাকে এবং প্রিয়জিতের সহকর্মীদেরও ডাকা হবে।”
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকের পরে প্রিয়জিৎ হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করে প্রথমে ছোটখাটো হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাজ করছিলেন। গত জানুয়ারিতেই রাজারহাটের ওই রেস্তোরাঁয় কাজ পান। যাতায়াতের সুবিধার জন্য দুর্গানগরে বিবাহ-বিচ্ছিন্না ওই মহিলার বাড়িতে ‘পেয়িং-গেস্ট’ হিসেবে থাকতে শুরু করেন। ফেসবুকেই দু’জনের আলাপ। গত শনিবার রাত সাতটা নাগাদ প্রিয়জিৎ মাকে ফোনে বিয়েবাড়ি যাওয়ার কথা বলেছিলেন। তার পরে আর তাঁর সঙ্গে পরিবারের কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ দেহটি মেলে।
তদন্তকারীরা জানান, ওই যুবকের পকেট থেকে তাঁর পরিচয়পত্র মেলে। যেখান থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে, তার পাশেই তাঁর মোবাইলটিও পড়ে ছিল। সেটি উদ্ধারের সময়ে ওই মহিলার (যাঁর বাড়িতে থাকতেন প্রিয়জিৎ) ফোন আসে। তাঁকে দমদম জিআরপি থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। সকালে তিনি প্রিয়জিতের জিনিসপত্র নিয়ে থানায় আসেন। কেন ওই মহিলা এমন আচরণ করলেন তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাঁরা জানান, প্রিয়জিতের পকেট থেকে সল্টলেকের একটি রেস্তোরাঁর বিলও মিলেছে। সেই বিল প্রিয়জিতের কার্ড থেকেই মেটানো হয়েছিল। বিয়েবাড়ি যাওয়ার কথা বলে রেস্তোরাঁয় তিনি কার সঙ্গে গেলেন তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছো। ওই রেস্তোরাঁর সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে বলে তাঁরা জানান।
প্রিয়জিতের জ্যাঠার দাবি, “রাত ২টো ২৭ মিনিটে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। সকালে আমরা ওই নম্বরে ফোন করলে, ও প্রান্ত থেকে বলা হয় প্রিয়জিৎ মারা গিয়েছে। তার পরে কেউ আর ফোন ধরেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy