মঙ্গলবারের ঝড় থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার প্রশিক্ষিত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছে হাওড়া পুরসভা। যে বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবেন রাজ্যেরই কোনও বিশেষ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। তাঁদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করবে পুরসভাই।
ক্ষমতায় আসার পরেই হাওড়া পুরসভায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর তৈরি করেছিল তৃণমূল শাসিত পুরবোর্ড। স্থানীয় ভাবে কয়েক জন যুবককে চাকরিও দেওয়া হয়েছিল। কোনও প্রশিক্ষণ বা আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই গত কয়েক বছর ধরে ওই যুবকেরাই যে কোনও দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে কাজ করছিলেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে মেয়রের নির্দেশে ওই যুবকদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় হাওড়া সিটি পুলিশের উপরে। কিন্তু অভিযোগ, সিটি পুলিশে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো প্রশিক্ষিত লোকজন না থাকায় ওই যুবকদের শুধুমাত্র দৌড়নো ছাড়া কোনও ব্যাপারেই পারদর্শী করে তুলতে পারেনি তারা। ফলে কার্যত নিধিরাম সর্দার হয়েই দিন কাটাতে হয়েছে ওই বাহিনীর সদস্যদের। আর তার ফল হাতেনাতে পাওয়া গিয়েছে মঙ্গলবার ঝড়ের পরে। ঘটনার দু’দিন পরে বৃহস্পতিবারও বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে থাকলেও তা সরানো যায়নি শুধুমাত্র আধুনিক যন্ত্রপাতি আর প্রশিক্ষিত বাহিনীর অভাবে।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তাই বৃহস্পতিবারই হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী জানান, রাজ্য সরকার যাতে ওই সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীর কাছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তিনি সেই আর্জিই জানাচ্ছেন। রথীনবাবু বলেন, ‘‘শুধু হাওড়া নয়, সব পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জন্য একটি বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পুরমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি। পাশাপাশি, বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনার ব্যাপারেও রাজ্যের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইছি। ফের কোনও বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে যাতে প্রস্তুত থাকতে পারি, তাই এই ব্যবস্থা।’’ পুরসভা জানিয়েছে, রাজ্য সরকারই ঠিক করে দেবে, এই বাহিনী কত জনকে নিয়ে তৈরি হবে।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, এক বছর আগে তাঁদের পক্ষ থেকে পুরসভাকে চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ৩০ জনের একটি বাহিনী তৈরি করে তাকে তিন ভাগে ভাগ করে তাঁদের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে তোলার জন্য। পাশাপাশি, আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনতে প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করার কথাও বলা হয়েছিল। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এক বছর পেরোলেও পুরসভাই ওই যন্ত্রপাতি কিনতে বা কর্মী-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy