খবরটা শোনা ইস্তক বিশ্বাস করতে পারছেন না ডানকুনির রঘুনাথপুর, ময়রাপাড়ার বাসিন্দারা। পড়শি যে মেয়েটা ছোট থেকে পাড়ার ক্লাবে জিমন্যাস্টিক্সে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েও সাঁতারে একের পর এক সাফল্য এনেছে। মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে সেই ঘরের মেয়ের রহস্য মৃত্যুর খবরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।
জাতীয় পর্যায়ের ডাইভার তনুকা ধাড়া (২৩) ওরফে ঝিলিক বছর দু’য়েক আগে পশ্চিম রেলওয়েতে তৃতীয় শ্রেণির কর্মীর চাকরি পান। সেই সূত্রে মুম্বইতেই একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এ দিন সেই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে তনুকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে মুম্বই পুলিশ। তনুকার মামা প্রদ্যুৎ পাল বলেন, ‘‘পুলিশের দাবি, ও নাকি আত্মঘাতী হয়েছে! কিন্তু আত্মঘাতী হওয়ার মতো মেয়ে ও নয়। খেলায় সাফল্য পাচ্ছিল। ওর কোনও সমস্যা ছিল বলেও তো শুনিনি। কী যে হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না।’’
তনুকার বাবা অমলেশ ধাড়া বিএসএনএল-এর অফিসার। মা শুক্লাদেবী গৃহবধূ। ডানকুনির রঘুনাথপুর সামন্তপাড়ায় তাঁদের বাড়ির পাশেই এসবি কবাডি ক্লাব। ছোট থেকে ওই ক্লাবেই জিমন্যাস্টিক শিখতেন তনুকা। ১২ বছর বয়সে দুর্ঘটনায় পায়ে মারাত্মক চোট পান তনুকা। জিমন্যাস্টিকের বদলে চলে আসেন সাঁতারে। বালি সুইমিং ক্লাবে অনুশীলন শুরু হয়। ডাইভার হিসেবে ক্রমশ নিজেকে মেলে ধরেন। কলকাতার হেদুয়া সুইমিং ক্লাবে অনুশীলন শুরু করেন। পরে প্রশিক্ষণ নেন সাইতেও। জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পদক এনেছেন। সেই সাফল্যের সূত্রেই রেলের চাকরি।
পরিবার সূত্রের খবর, বাইরে থাকলে প্রতিদিনই বাড়িতে ফোন করতেন তনুকা। বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত মায়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। পরের দিন সকাল থেকে অবশ্য বাড়ির লোকেরা বার বার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তাঁর ফোন বেজে যায়। এর পরেই পরিবারের তরফে তনুকার অফিসে যোগাযোগ করা হয়। দুপুরে দুঃসংবাদ আসে বাড়িতে। বিকেলেই অমলেশবাবু এবং শুক্লাদেবী মুম্বই রওনা হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy