দফতরের প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী কয়েক মাস আগেই মাহেশে পর্যটন কেন্দ্র তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ কার্যত শুরুই হয়নি। কবে হবে, দফতরের পূর্ণমন্ত্রীও তা স্পষ্ট করে জানাতে পারলেন না। ফলে রথ, জগন্নাথ মন্দির এবং মাসির বাড়িকে কেন্দ্র করে পরিকাঠামো ঢেলে সাজা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
গত বছরের ১ জুন হুগলিতে প্রশাসনিক বৈঠকে মাহেশে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় প্রসঙ্গ তুলতেই মুখ্যমন্ত্রী কার্যত তাঁর কথা কেড়ে নিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এটা আমার প্রকল্প। উই হ্যাভ টু ডু ইট।’’
বুধবার বিকেলে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব মাহেশের জগন্নাথ মন্দির সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রতীপ মণ্ডল, শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক তনয় দেব সরকার। পর্যটনের জন্য কোথায় কোন কাজের পরিকল্পনা রয়েছে, মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী, সেবাইত ও কাউন্সিলর অসীম পণ্ডিত, তিয়াসা মুখোপাধ্যায়রা মন্ত্রীকে তা বুঝিয়ে বলেন।
পরে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মানের একটা গেট তৈরির কথা বলেছিলেন। যত্ন সহকারে, খুব ভাল করে আন্তর্জাতিক মানের একটা গেট নিশ্চয়ই করব। আরও অনেকগুলো কাজের প্রস্তাব রয়েছে।’’
কাজে বিলম্বের কথা মানতে চাননি মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ডিজাইন, ড্রয়িং এবং সৃষ্টিশীল কাজে একটু সময় লাগে। এটা বুঝতে হবে। দুম করে কোনও কাজ করা যায় না।’’ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘সব জায়গা থেকে মনোনয়ন, অনুমতি নিয়ে ক্রিয়েটিভ কাজটা করা হবে।’’
মাহেশের সাধারণ মানুষ থেকে মন্দির কর্তৃপক্ষ সকলেই অবশ্য মানছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে প্রশাসনিক স্তরে দৌড়ঝাঁপ দেখে মনে হয়েছিল, দ্রুত কাজ হবে। ঘোষণার দিন কয়েকের মধ্যেই পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন মাহেশে এসে অতিথিশালা, আলোর ব্যবস্থা-সহ নানা কাজ নিয়ে পুরসভা, মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত কাজ শুরুর কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাজে দেরি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।
মাহেশের বাসিন্দা, কলেজ-শিক্ষিকা সঞ্চারী গোস্বামীর কথায়, ‘‘রথের সময় মেলা বসে। ব্যবসা হয়। ব্যস, ওই পর্যন্তই। দর্শনার্থীদের কাছে এখানকার ইতিহাস জানান দেওয়ার ব্যবস্থা বা যাত্রী স্বাচ্ছ্বন্দ্য— কিছুই গড়ে ওঠেনি। শুধুই ‘হবে হবে’ শুনি। এ ক্ষেত্রেও তাই শুনছি।’’
কোথায় সমস্যা?
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাস্তায় তোরণের নকশা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জায়গা নির্ধারণ করা যায়নি। ঠিক হয়েছিল, জিটি রোডের উপরে তোরণটি করা হবে। কিন্তু তাতে মাটির তলায় থাকা বিদ্যুৎ, টেলিফোনের তার, জলের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই, বিকল্প জায়গা ঠিক করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে প্রশাসনিক স্তরে বৈঠক হওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাকি কাজের জন্য মাটি পরীক্ষা কাজ চলছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট এলেই শীঘ্র পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু হবে। জগন্নাথ ফেরিঘাটের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy