ঋণের টাকা শোধ করতে সাত মাসের শিশুপুত্রকে এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে শিশুটির বাবা-মা সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার পাঁচলা থানা এলাকায়। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে পাঠিয়েছে। বল্টু ওরফে শক্তি চক্রবর্তী ও সোমা চক্রবর্তী নামে ওই দম্পতি এবং হুগলির হরিপালের বাসিন্দা তথা শিশুটির পালক পিতা কৃষ্ণ ওরফে নেপাল সিটকে শনিবার গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচলার বাসিন্দা শক্তি ও সোমাদেবীর বছর চারেকের একটি ছেলে রয়েছে। মাস সাতেক আগে তাঁদের আরও একটি সন্তান হয়। শক্তিবাবু জরির কাজ করেন। টানাটানির সংসারে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তাঁদের এক আত্মীয় থাকেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের অছিপুরে। যিনি আবার নেপালবাবুরও আত্নীয়। নিঃসন্তান নেপালবাবু ও তাঁর স্ত্রী দত্তক নেওয়ার জন্য শিশুর খোঁজে ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই আত্নীয় শক্তি ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এরপরেই গত ১৯ অক্টোবর নিঃসন্তান ওই দম্পতিকে টাকার বিনিময়ে শক্তি ও তাঁর স্ত্রী নিজেদের কনিষ্ঠ সন্তানকে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ।
কী ভাবে জানাজানি হল বিষয়টি?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শক্তি প্রতিদিনই তাঁর ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। কিন্তু ১৯ তারিখের পর আর ছোট ছেলেকে নিয়ে বাইরে বেরোতেন না। প্রতিবেশীরা ছেলের কথা জানতে চাইলে নানা কথা বলছিলেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, কখনও বলছিলেন ছেলের শরীর খারাপ। কখনও বলছিলেন তাঁর এক আত্নীয়ের কাছে পালন করতে দিয়েছেন। প্রথমে তাঁরা তা বিশ্বাসও করেছিলেন। কিন্তু রবিবার আনন্দবাজারে শ্যামপুরে এক সদ্যোজাতকে বিক্রির খবরে তাঁদের সন্দেহ জাগে। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ওই খবর দেখে শক্তিকে চেপে ধরলে টাকার বিনিময়ে ছেলে বিক্রির কথা সে স্বীকার করে। এরপর প্রদীপ ঘড়ুই নামে এক প্রতিবেশী থানায় খবর দেন। পুলিশের দাবি, জেরায় শক্তি স্বীকার করেছে, সংসারের অভাব মেটাতে অনেক টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। সেই ধার শোধ করতেই সে ছেলেকে হুগলির হরিপালের ওই দম্পতির কাছে বিক্রি করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy