ভুটভুটি দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরে, রবিবার দুপুরে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া ঘাটের কাছ থেকেই উদ্ধার হল তলিয়ে যাওয়া কলেজ পড়ুয়া শ্যামনগরের টোটাওয়েটার কিরণকুমারের (২০) মৃতদেহ। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি চলেছিল। রবিবার ভোর থেকে গঙ্গায় তল্লাশিতে নামেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। দুপুরে ঘাটের কাছে আটকে থাকা দেহটি উদ্ধার করেন তাঁরা। তবে, এ দিন বিকেল পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনায় তলিয়ে যাওয়া আর এক যাত্রীর সন্ধান মেলেনি। সকালে একবার তেলেনিপাড়া ঘাট এবং শ্যামনগর ঘাটের মধ্যে ফেরি চলাচল হলেও হামলার আশঙ্কায় তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, বিপাকে পড়েন দু’পারের বহু যাত্রী।
চন্দননগরের মহকুমাশাসক পীযুষ গোস্বামী জানিয়েছেন, তলিয়ে যাওয়া আর এক যুবকের খোঁজে তল্লাশি চলবে। দু’পারের মধ্যে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চন্দননগরের গোন্দলপাড়ায় স্পোকেন ইংলিশের টিউশন নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ তেলেনিপাড়া ঘাট থেকে ভুটভুটিতে ওঠে শ্যামনগরের অকল্যান্ড জুটমিল সংলগ্ন কুলিলাইনের বাসিন্দা, বছর এগারোর তেজস্বিনী এবং তার প্রতিবেশী, টোটাওয়েটার কিরণকুমার। ভুটভুটিতে আরও কয়েক জন ছিলেন। ভুটভুটিটি ছাড়ার মুহূর্তে গঙ্গায় বান আসে। সেই ধাক্কায় ভুটভুটির এক দিক হেলে যেতেই সকলে জলে পড়ে যান। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন নিজেরাই উঠে পড়েন। ঘাটে থাকা লোকজন ঝাঁপ দিয়ে তেজস্বিনীকে উদ্ধার করলেও কিরণকুমার এবং আর এক যুবকের নাগাল পাননি। এই দুর্ঘটনার জেরে তেতে ওঠে দু’টি ফেরিঘাটই। বছর পনেরোর একটি ছেলেকে দিয়ে ভুটভুটি চালানোর জন্যই দুর্ঘটনা, এই অভিযোগে শ্যামনগর ফেরিঘাটে তিন কর্মীকে মারধর করে টিকিট কাউন্টার এবং যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ গিয়ে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। তেলেনিপাড়া ঘাটের বেহাল দশার জন্য বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো মানুষ। গোলমালের জেরে দু’পারের মধ্যে ভুটভুটি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ কয়েক জন যাত্রী তেলেনিপাড়া ঘাটে জড়ো হওয়ায় একটি ভুটভুটি চালানো হয়। কিন্তু এক বার পারাপারের পরেই ভুটভুটি চালানো বন্ধ করে দেন কর্মীরা। দুপুরে কিরণকুমারের দেহটি উদ্ধারের পরে এ দিনই চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়। বিকেলে শ্যামনগরে দেহটি ফিরিয়ে নিয়ে যান কিরণকুমারের পরিবারের লোকজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy