এই জায়গাতেই প্রস্তাবিত মাতৃসদন ও ভবঘুরেদের আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র।
বিশ বছর হতে চলল, বৈদ্যবাটী পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদন বন্ধ। নতুন ভাবে মাতৃসদন চালুর জন্য পুরনো জীর্ণ ভবন ভাঙা হয়েছে। পরিকল্পনা আছে, এখানে পাঁচতলা ভবন হবে। তার দু’টি তলায় হবে আধুনিক মাতৃসদন। কিন্তু তা কবে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, বছর ঘুরে গেলেও পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আওতায় সেই প্রকল্পের কাজ এগোয়নি।
অভিযোগ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এসসিএম রোডে সেই জায়গার সামনে রাস্তার পাশে গুমটি বসেছে। শাসকদলের কার্যালয় তৈরি হয়েছে। ওই জায়গা দখলের চেষ্টা চলছে বলে আশঙ্কা করছেন পুরসভার বিরোধী থেকে শাসকদলের জনপ্রতিনিধিও। পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো অবশ্য আশঙ্কার কথা উড়িয়ে জানিয়েছেন, প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে।
বৈদ্যবাটী পুরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬৯ সালে। তারও প্রায় দশ বছর আগে দাতব্য চিকিৎসালয় ও মাতৃসদন চালু হয় এক ব্যক্তির দান করা জমিতে। নাম ছিল— ‘অপরূপা মাতৃসদন।’ পাশেই পুরসভার কার্যালয় হয়। পুরভবন শেওড়াফুলিতে জিটি রোডের ধারে চলে যাওয়ার পরে ২০০৪ সালে এখানে অপরূপা মাতৃসদন স্থানান্তরিত হয়। এখানে মনিটরিং ব্যবস্থা-সহ ২৫টি শয্যা ছিল। অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে, আলট্রা-সনোগ্রাফি সবই ছিল। কিন্তু বছরখানেক চলার পরে দুর্নীতির অভিযোগে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে বন্ধই। এখন এখানে পুরসভার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চলে।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ, দেড়শো বছর পেরনো পুরসভায় আধুনিকতার ছোঁয়া এলেও বদলায়নি বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবার চেহারা। শহরে কোনও হাসপাতাল নেই। ভরসা শ্রীরামপুর অথবা চন্দননগর। অভিযোগ, মাতৃসদনের শয্যা, অধিকাংশ যন্ত্রপাতি উধাও। কিছু থাকলেও বছরের পর বছর পড়ে থেকে অকেজো। অনেকেরই খেদ, রাতবিরেতে প্রসব বেদনা উঠলে অন্তঃসত্ত্বাকে হয় নার্সিংহোমে, না হলে পাশের শহরের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। সরকারি পরিকাঠামোয় একটা পুরনো শহরে বন্দোবস্তই নেই, এটা দুর্ভাগ্যের।
পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম সদস্য অভিজিৎ গুহ বলেন, ‘‘২০২২ সালের নভেম্বর মাসে পুরবোর্ডের মিটিংয়ে নতুন ভবন তৈরির জন্য পুরনো দাতব্য চিকিৎসালয় ও মাতৃসদনের ভবন ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। পরের মাসেই ভাঙা হয়। আর কিছুই হয়নি। পুরসভাও কিছু বলছে না।’’ অভিজিৎ বা ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরসদস্য রত্না দাসদের অভিযোগ, ‘‘জায়গাটি দখলের চেষ্টা চলছে।’’ পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) মহুয়া ভট্টাচার্যেরও কার্যত একই আশঙ্কা।
তবে পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘মাতৃসদন হবে। বিরোধীরা এবং কিছু লোকজন মিথ্যাচার করছে। অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ তাঁর দাবি, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ডাকা দরপত্র দু’বার বাতিল হয়, আবেদন জমা না পড়ায়। তৃতীয় বার দরপত্র প্রক্রিয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাসংস্থার লোকেরা জায়গা দেখেও গিয়েছেন। ওয়ার্ক অর্ডার পেলেই কাজ শুরু হবে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘জায়গা কেউ দখল করেনি। নতুন করে সেখানে কিছু হয়নি। কাজ শুরু হলে কোনও বাধা আসবে না।’’
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত ভবনের দু’টি তলে ভবঘুরেদের আবাস তৈরি করা হবে। মাতৃসদনের পাশাপাশি পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই কাজও হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy