কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে ছয় লেনের এলিভেটেড করিডর বা উড়ালপুল নির্মাণ করতে গিয়ে
বেশ কিছু জায়গায় ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে অথবা ভেঙে গিয়েছে। ফলে, হাওড়া পুরসভার ৪৬ ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড-সহ আরও কিছু এলাকার নিকাশি পর্যুদস্ত। বর্ষার আগে সেগুলি না সারালে দক্ষিণ হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা অবরুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন পুরকর্তারা। বুধবার দুপুরে হাওড়ার জেলাশাসক পি দিপাপ প্রিয়া, নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী, পুর কমিশনার-সহ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকদের দল কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ওই নির্মাণ পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি দেখেন। অবিলম্বে নিকাশির মেরামতি-সহ কাজ চলাকালীন কী ভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে খবর।
কলকাতা, হাওড়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলায় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা
হাওড়ার এই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। যে কারণে নিত্যদিন ওই এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। সেই পথ জটমুক্ত করতে ছয় লেনের এলিভেটেড করিডর বা একটি উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো কাজ শুরু হয়েছে। সাত কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপুলটি বিদ্যাসাগর সেতুর টোল-ট্যাক্স পেরিয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ফুটবল গেট থেকে শুরু হয়ে নিবড়া মোড়ের আগে খেজুরতলা পর্যন্ত যাবে। খেজুরতলায় নামার আগে সেতুটির তিনটি র্যাম্প বেরোবে। একটি তৈরি হবে সাঁতরাগাছি বাস টার্মিনাসে নামার আগে, বাকি দু’টি হবে নিবড়া ও জাতীয় সড়কের দিকে। ইতিমধ্যে উড়ালপুলের একাধিক কংক্রিটের স্তম্ভ হয়ে গিয়েছে।
এ দিন বিকেল পর্যন্ত সাত কিলোমিটার ওই পথ কখনও হেঁটে, কখনও গাড়িতে
পরিদর্শন করেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। পরে জেলাশাসক জানান, এক্সপ্রেসওয়ের নীচ দিয়ে প্রচুর বৈদ্যুতিক কেব্ল, নিকাশি নালা গিয়েছে। কাজের সময়ে সেগুলি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় বা সমস্যা সৃষ্টি না করে, তাই পরিদর্শন করা হচ্ছে।
পরিদর্শন শেষে জেলাশাসক বলেন, ‘‘এলিভেটেড করিডর তৈরি করা বড় কাজ। তাই হাওড়া
পুরসভা, সিইএসসি, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসনের মধ্যে সমম্বয় রেখে কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তার জন্যই এ দিন পর্যবেক্ষণ হল। শুধু নিকাশি নালা বা ভূগর্ভস্থ
তার নয়, ওই সময়ে কী ভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা-ও দেখা হয়েছে।’’
কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে কোনও বেআইনি নির্মাণ রয়েছে কিনা, তা-ও পরিদর্শনে দেখা হয়। কারণ, এলিভেটেড করিডর তৈরি করতে ইতিপূর্বেই রাস্তা চওড়া করা হয়েছে। এ জন্য প্রচুর বেআইনি নির্মাণও ভাঙা হয়েছে। জেলাশাসক আরও জানান, রাস্তা চওড়া হয়ে গিয়েছে। কোনও বেআইনি নির্মাণ নেই। পুর চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সমস্ত নর্দমা তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস মিলেছে তাঁদের থেকে। কিছু নর্দমা চওড়াও করে দেওয়া হবে বলে কথা দেওয়া হয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)