Advertisement
E-Paper

জোড়া সমস্যা মিটল, সাফল্য এমএসকে-র

তখন ছিল শুধু পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের ব্যবস্থা। নিয়মানুযায়ী, এমএসকে তে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন পাঠন হওয়ার কথা।

মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে চলছে ক্লাস।

মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ০৯:৩০
Share
Save

হাওড়া জেলার ২৭টি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের (এমএসকে) মধ্যে একটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলির অধিকাংশ ধুঁকছে। ব্যতিক্রম ডোমজুড়ের বাঁকড়া মিশ্রপাড়া এমএসকে। চারশোর বেশি পড়ুয়া নিয়ে রমরমিয়ে চলছে এই শিক্ষাকেন্দ্রটি। এর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং গ্রামবাসীদের ঐকান্তিক চেষ্টারই প্রশংসা করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

জেলার যে এমএসকেটি ইতিমধ্যে ঝাঁপ ফেলেছে সেটি ডোমজুড়েরই। এই ব্লকেরই আরও একটি এমএসকে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সেখানে কী করে ব্যতিক্রমী হল মিশ্রপাড়া এমএসকে?

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমএসকে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মূল কারণ হল, শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া। ফলে বিভিন্ন এমএসকেতে যখন একের পর এক শিক্ষক অবসর নিয়েছেন সেখানে নতুন নিয়োগ না হওয়ায় সেগুলি সঙ্কটে পড়েছে। সেখানেই এগিয়ে গিয়েছে মিশ্রপাড়া এমএসকে।

ওই এমএসকে সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই স্কুলে প্রথমে দু’জন শিক্ষক ছিলেন। তখন ছিল শুধু পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের ব্যবস্থা। নিয়মানুযায়ী, এমএসকে তে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন পাঠন হওয়ার কথা। এই স্কুলে ধীরে ধীরে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা চালু হয়ে যায়। ২০১০ সালের মধ্যে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ জনে। কিন্তু পরে তিন শিক্ষক
অবসর নেন।

সরকার শিক্ষক নিয়োগ না করায় এগিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং গ্রামবাসীরা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করেন স্কুলে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। আর ওই শিক্ষক নিয়োগের জন্য অভিভাবকেরা অর্থ সাহায্য করবেন এবং সেটা দিয়ে দেবেন পড়ুয়ারা স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময়েই। এই মুহূর্তে স্কুলে আংশিক সময়ের শিক্ষক আছেন ৯ জন।

দ্বিতীয়ত, নিয়মানুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর নিয়ম থাকলেও এখানে নবম-দশম শ্রেণিও চলে। সাঁত্রাগাছির একটি হাই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন গ্রামবাসী ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়, এই স্কুলের পড়ুয়ারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে ওই হাই স্কুল থেকে। সেই অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে চালু হয় নবম-দশম শ্রেণিও।

স্কুলের উন্নতিতে বাঁকড়া-৩ পঞ্চায়েতও সাহায্য করেছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান। তারা ঢালাই রাস্তা করে দিয়েছে। জল সরবরাহের জন্য সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। পঞ্চায়েত ও গ্রামবাসীদের আর্থিক সহায়তায় অতিরিক্ত ভবন তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও আছে পুরনো তিনতলা ভবন। যে কোনও উন্নত হাইস্কুলের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে এই স্কুলের পরিকাঠামো।

স্কুলটি অবস্থিত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়। বেশিরভাগ মানুষের পেশা দর্জির। স্কুল পরিচালন সমিতিতে অভিভাবক প্রতিনিধি শেখ আসপিয়ার বলেন, ‘‘আমাদের এলাকা অনুন্নত। এখানে শিক্ষার প্রসারে এই স্কুলের ভূমিকা আছে। সেই কারণে আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে মিলিতভাবে স্কুলের উন্নয়নে সামিল হয়েছি।’’ একই কথা বলেন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি বলরামও।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ আকবর বলেন, ‘‘অধিকাংশ এমএসকে সঙ্কটে পড়ার কারণ দু’টি। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া ও স্কুলগুলিতে নবম-দশম শ্রেণি না থাকা। সেই সমস্যা মেটানোর জন্যই আমরা তৎপর ছিলাম। ফলে স্কুল উঠে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়নি।’’

মিশ্রপাড়া এমএসকের প্রশংসা করলেও এমএসকেগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নে জেলা প্রশাসনের কর্তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এক কর্তা জানান, এ বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

domjur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}