বিপত্তি: জোয়ারের জলের ধাক্কায় পন্টুন পেরিয়ে ঝুলছে শিবপুর জেটির গ্যাংওয়ে। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
গঙ্গায় আসা বানের তোড়ে ফের ভেঙে গেল শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। ২০১৫ সালের পর থেকে এ নিয়ে পঞ্চম বার এই ঘটনা ঘটল। যার জেরে সোমবার সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে গেল শিবপুর ঘাট ও বাবুঘাটের মধ্যে লঞ্চ পরিষেবা। দুর্ভোগে পড়লেন কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী। তাঁদের অভিযোগ, কয়েক বছর পর পরই বানের তোড়ে জেটি ভাঙে। তার পরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে জেটি মেরামত করা হয়। কিন্তু আবারও জেটি ভাঙে। তাঁদের প্রশ্ন, এত খরচ করে মেরামতির পরেও ফের জেটি ভাঙছে কেন? পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন দুপুরে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি পরিচালকমণ্ডলীর সদস্যেরা ঘটনাস্থলে আসেন। যদিও আবার কবে লঞ্চ পরিষেবা চালু হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কেউ কিছু জানাতে পারেননি।
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ও সোমবার সকালে আসা বানের তোড়ে শিবপুর লঞ্চঘাটের গ্যাংওয়ের (জেটিতে হাঁটার রাস্তা) দু’টি মোটা লোহার শিকল ছিঁড়ে যায়। ভেঙে যায় রেলিংয়ের একাংশ। যার জেরে গ্যাংওয়েটি পন্টুন ডিঙিয়ে গঙ্গায় ঝুলতে থাকে। গ্যাংওয়ের নীচে থাকা বিম ভেঙে যায়। এই পরিস্থিতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন সমবায় সমিতির রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের কর্মীরা। তাঁরা জেটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় টিকিট কাউন্টার। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় লঞ্চঘাটে ঢোকার কোল্যাপসিবল গেটে।
এই ঘটনায় বিপাকে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের প্রশ্ন, এত ঘন ঘন জেটি ভাঙবে কেন? তা হলে কি মেরামতি ঠিক করে হচ্ছে না? দীনবন্ধু মাইতি নামে শিবপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা এক নিত্যযাত্রী বললেন, ‘‘১৯৯১ সাল থেকে আমি এই ঘাটের যাত্রী। মাঝে মাঝেই এই জেটি বানের তোড়ে ভেসে যায় আর আমাদের চরম হয়রানি হয়। প্রতি বারই শোনা যায়, কোটি কোটি টাকা খরচ করে মেরামতি হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও জেটি ভাঙে কেন?’’ জেটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, কোনও রক্ষণাবেক্ষণই হয় না। আলো ভেঙে ঝুলছে। গ্যাংওয়েতে যাওয়ার কংক্রিটের রাস্তার নীচে যে লোহার খাঁচা রয়েছে, তা মরচে ধরে ভেঙে গিয়েছে। ওই ঘাট সংলগ্ন বাসিন্দাদের আশঙ্কা, অবিলম্বে ওই লোহার খাঁচা না সারালে কংক্রিটের রাস্তাটি ভেঙে পড়তে পারে। তাতে মারাত্মক অঘটন ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
সমবায় সমিতির এক কর্তা বলেন, ‘‘গ্যাংওয়েটি সরিয়ে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। এ ব্যাপারে সাহায্য চেয়ে রাজ্য ভূতল পরিবহণ নিগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy