ভেঙে দেওয়া হয়েছে দোকান। ব্যান্ডেল স্টেশনে। ছবি: তাপস ঘোষ।
বকেয়া ভাড়া না-মেটানোয় রবিবার মাঝরাতে ব্যান্ডেল স্টেশনে ১৫টি স্টল ভেঙে দিল রেল। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে দু’বছর ট্রেন বন্ধ থাকায় বেচাকেনা হয়নি। সংসার চলেছে খুঁড়িয়ে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ভাড়া কমানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু, সে কথা শোনা দূরঅস্ত, দোকান ভেঙে রেল কর্তৃপক্ষ কার্যত পেটে লাথি মারলেন বলে তাঁদের অভিযোগ। গোটা বিষয়টি নিয়ে রেলের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ
তুলছেন তাঁরা।
রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ব্যবসায়ীদের বক্তব্যের তোয়াক্কা করেননি। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বকেয়া মেটানোর কথা বারে বারেই বলা হয়েছে। নোটিস দেওয়া হয়েছে। ওঁরা শোনেননি। সেই কারণেই স্টল ভাঙা হয়েছে।’’
ব্যান্ডেল একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন। দিনভর বিভিন্ন শাখার লোকাল চলার পাশাপাশি দূরপাল্লার বহু ট্রেন এখানে থামে। অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন। প্ল্যাটফর্মে রেলের অনুমোদিত ওই সব দোকান থেকে তাঁরা বিভিন্ন খাবার কিনে খান। টুকিটাকি জিনিসও কেনেন। ইজারার বিনিময়ে ওই সব স্টল চলে। তবে, গত বছর লকডাউনের পরেই ছবিটা বদলে যায়। ট্রেন বন্ধ থাকায় প্ল্যাটফর্ম হকারদের ব্যবসা লাটে ওঠে। এ বছরেও দীর্ঘসময় ট্রেন বন্ধ ছিল।
ব্যবসায়ীরা জানান, রেল প্রতি বছর ভাড়া বাড়ায়। করোনা পরিস্থিতির জেরে ব্যবসার দৈন্যদশার কারণে তাঁরা রেলের কাছে বর্ধিত ভাড়া মকুবের দাবি করেছিলেন। রেল কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত না করায় ব্যবসায়ীরা আদালতে যান। তাঁদের অভিযোগ, মামলা চলাকালীন রেল বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়ে নোটিস দেয় কয়েক দিন আগে। অবিলম্বে ভাড়া না মেটালে দোকান তুলে ফেলার কথা বলা হয়। রবিবার মাঝরাতে রেলের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে স্টলগুলি ভেঙে দেওয়া হয়।
ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রেল একতরফা পদক্ষেপ করল। নির্মল জৈন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘বর্ধিত ভাড়াটুকু শুধু মকুবের আবেদন করা হয়েছিল। তার ফল এমন হবে, ভাবিনি। রেলের কাছে আমাদের অনুরোধ, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি দেখে বর্ধিত ভাড়া মকুব করে আমাদের আবার বসতে
দেওয়া হোক।’’
চা বিক্রেতা সাউকুমার রাও বলেন, ‘‘দোকানের আয়ে ছ’জনের পরিবার চলে। রেল ভাড়ার টাকা বাড়িয়েই চলেছে। করোনার সময় রোজগার বন্ধ হওয়ায় মেয়েদের পড়াশোনা চালানোও কঠিন হয়ে পড়েছিল। একটু করে পরিস্থিতি শুধরোচ্ছিল। এখন কী করে সংসার চলবে, বুঝতে পারছি না। করোনার সময় যে ক্ষতি হয়েছিল, রেলের অমানবিকতায় তার চেয়েও বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy