রূপনারায়ণ নদের জলে ডুবল জগৎপুরের গড়েরঘাট-মায়াপুর রাস্তা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
কোথাও কোনও বাঁধ ভাঙেনি। বৃষ্টি চললেও ডিভিসি জল ছাড়ার বহর বাড়ায়নি। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতির অবনতি হল খানাকুল-২ ব্লকে। এখানকার তিনটি পঞ্চায়েতের (ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা এবং জগৎপুর) অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কারণ, রূপনারায়ণ নদ কানায় কানায় পূর্ণ। বৃষ্টির জমা জল, মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাড়তি জল নামতে পারছে না। উল্টে রূপনারায়ণের জলই ঢুকে পড়ছে ওই তিন পঞ্চায়েত এলাকায়।
জেলা সেচ দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন পাল (নিম্ন দামোদর বিভাগ) বলেন, ‘‘ডিভিসি জল ছাড়া কমিয়েছে। খানাকুলে কোথাও কোনও বাঁধ ভাঙেনি। তবে, রূপনারায়ণের জলে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।’’
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাড়োখানার পানশিউলি, ঢলডাঙা, মাড়োখানা, বনহিজলি এবং চাঁদকুণ্ডু গ্রামের মাঠঘাট এবং রাস্তায় প্রায় পাঁচ ফুট জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। একই অবস্থা জগৎপুরের নন্দনপুর, জগৎপুর এবং বাড়নন্দনপুরে। ধান্যগোড়ির কাকনান, ঘোড়াদহ এবং ধান্যগোড়ি গ্রামও জলমগ্ন হয়েছে। নতিবপুর-১ ও ২, পলাশপাই-১ ও ২, চিংড়া, শাবলসিংহপুর ইত্যাদি পঞ্চায়েত এলাকাতেও মাঠঘাট ডুবেছে।
জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমার অন্যান্য এলাকার চেয়ে খানাকুলের দু’টি ব্লকেরই ভৌগোলিক অবস্থান প্রায় ১০ ফুট নীচে। গামলা বা কড়াইয়ের আকারে প্রায় ২৯৪ বর্গকিলোমিটার ওই এলাকায় আছে ২৪টি পঞ্চায়েত। প্রায় তিন লক্ষ মানুষের বাস। পূর্বে মুণ্ডেশ্বরী নদী, পশ্চিমে দ্বারকেশ্বর এবং দক্ষিণে রূপনারায়ণ নদ দিয়ে ঘেরা। বহু খালও রয়েছে। মহকুমার সমস্ত নদনদীর জল তো বটেই, বৃষ্টির জমা জল নিকাশির একমাত্র পথ রূপনারায়ণ।। রূপনারায়ণ সেই জল নিয়ে সমুদ্রে ফেলে। কিন্তু রূপনারায়ণ মজে গিয়ে জল দ্রুত নামে না। নদের ধারে কোনও বাঁধ নেই। কিছু এলাকায় তীর বাঁধানো আছে।
ফলে, প্রতি বছরই অতিবৃষ্টি হলে বা ডিভিসি বাড়তি জল ছাড়লে খানাকুল-২ ব্লকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে জেলার সেচকর্তাদের। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোথাও কোনও বাঁধ না-ভাঙলেও ওই ব্লকের বাসিন্দারা এ যাত্রাতেও দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেলেন না বলে সেচকর্তারা জানিয়েছেন।
খানাকুল-১, পুরশুড়া বা আরামবাগ ব্লকে কোথাও মুণ্ডেশ্বরী-দামোদর উপচে বা পাড় ভেঙে জল ঢোকেনি বলে বিডিওরা জানিয়েছেন। সেচ দফতর জানিয়েছে, রবিবার সকালে দামোদরে জলের উচ্চতা প্রায় চরম বিপদসীমার (১৩.৫০ মিটার) কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। তবে, বিকেলে কিছুটা কমে জলস্তর ১৩ মিটার উচ্চতায় দাঁড়ায়। মুণ্ডেশ্বরী এ দিন প্রাথমিক বিপদসীমারও কিছুটা নীচে ছিল।
অন্যদিকে, শনিবার রাত থেকে জাঙ্গিপাড়ার রশিদপুর পঞ্চায়েতের আঁকনা, সেনপুর এবং রাজবলহাট-১ পঞ্চায়েতের ছিটগোলা গ্রামে দামোদরের জল ঢুকতে শুরু করেছে। তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা পঞ্চায়েতের বিনগ্রামও জলমগ্ন হয়। জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তমাল শোভন চন্দ্র জানান, দামোদরে জল বেড়ে যাওয়ায় তা ঢুকেছে। ২০০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দু’টি ত্রাণ শিবিরে ৪০টি পরিবারকে সরিয়ে আনা হয়েছে।
তথ্য সহায়তা: দীপঙ্কর দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy