হুগলিতে একসঙ্গে আন্দোলনে বিজেপি ও সিপিএম (বাঁ দিকে), শম্ভু মিদ্যার দু’হাতে সিপিএম ও বিজেপির পতাকা (ডান দিকে)। নিজস্ব ছবি।
স্লোগান উঠছে, নরেন্দ্র মোদী জিন্দাবাদ। আর তাতে এ দিক-ও দিক উঁকিঝুঁকি মারছে লাল ঝান্ডা। আলিমুদ্দিনের নিষেধ উড়িয়ে আবার হুগলি জেলায় ‘রাম-বামের’ একসঙ্গে আন্দোলন। এ বার ঘটনাস্থল হুগলির দাদপুর থানা এলাকার পাঁজিপুকুরের হারিট গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়। সিপিএমের যোগদানের কথা বিজেপি মেনে নিলেও দলীয় নেতৃত্বের দাবি, রাস্তা থেকে পতাকা তুলে বিজেপি এই সব নাটক করছে।
আবাস প্রকল্পে নয়ছয় ও স্বজনপোষনের বিরোধিতা করে পঞ্চায়েত অফিসের আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলল বিজেপি ও সিপিএম। উপলক্ষ, হারিট পঞ্চায়েত অফিসে স্মারকলিপি জমা দেওয়া। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, গরিব মানুষকে ঘর দিতে প্রকল্প এনেছেন মোদী। আর সেই টাকা ‘খেয়ে’ দোতলা বাড়ির উপর তিন তলা বাড়ি বানাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের আন্দোলন যে সাধারণ মানুষকে ছুঁয়েছে তারই প্রমাণ সিপিএমের পতাকা হাতে লোকজনের উপস্থিতি। এমনই দাবি করছেন আন্দোলনরত বিজেপি নেতা অর্ঘ্য চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, সিপিএমের স্থানীয় কর্মীরা দিশাহীনতায় ভুগছেন। তাঁদের নেতাদের দেখা পাওয়া যায় না। তাই ন্যায্য দাবি আদায়ে তাঁরা বিজেপির ছাতার তলায় এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের যে সমস্ত নেতারা আছে তাঁদের দেখা পাওয়া যায় না। তাই এঁরা আমাদের ডেপুটেশনে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে যোগ দিতে এসেছেন। কারণ তাঁরা জানেন, বিজেপির পাশে থেকে আন্দোলন না করলে হকের জিনিস পাওয়া যাবে না। সিপিএমের কর্মীরা এখন ওদের দলের নেতাদেরও বিশ্বাস করে না।’’
যদিও সিপিএম নেতারা অবশ্য হাত ধরাধরির কথা মানতে চান না। সিপিএমের হুগলি জেলার সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘সিপিএমের কোনও কর্মী ছিলেন না। ওটা বিজেপির কর্মসূচি ছিল। সেখানেই রাস্তার পাশে আমাদের কিছু পতাকা লাগানো ছিল। সেই ঝান্ডাগুলো নিজেরাই তুলে এনে সিপিএম যোগ দিয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি। আমাদের কি মাথাখারাপ! ওখানে আমাদের গণ সংগঠনের লোকও ছিলেন না। কোথাকার কে বিজেপি রাস্তা থেকে আমাদের পতাকা তুলে নাটক করছে!’’
হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা শম্ভু মিদ্যা দু’কাধে সিপিএমের লাল ঝান্ডা এবং বিজেপির গেরুয়া পতাকা নিয়ে হাজির। তাঁর দাবি, তিনি আগে সিপিএম করতেন। তৃণমূল সরকারের আমলে কিছুই পাননি। এ দিকে দলের নেতাদেরও দেখা মেলে না। তাই হকের দাবি আদায়ে বাধ্য হয়ে বিজেপি করছেন। শম্ভু বলেন, ‘‘সিপিএমের নেতারা এখন কাছে আসেন না। কেউ দেখেও না। সিপিএম করি বলে জব কার্ডের টাকা পাই না। মাটির বাড়িটা যে কোনও দিন ভেঙে পড়বে। এখন ঠেকায় পড়ে বিজেপির সঙ্গে আসতে বাধ্য হয়েছি। দলেই যোগ দিয়েছি এক রকম।’’ কিন্তু সিপিএমের পতাকা নিয়ে এলেন কেন? শম্ভুর সটান জবাব, ‘‘সিপিএম করি বলে সিপিএমের পতাকা নিয়ে এসেছি।’’
ইদানীং গ্রামবাংলায় রাম-বাম জোট নিয়ে চর্চা চলছে। বিভিন্ন সমবায় ভোটে সিপিএম বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে। যা নিয়ে চিন্তিত আলিমুদ্দিনও। দলীয় পর্যায়ে বিজেপির হাত না ধরার কড়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করায় কয়েকটি জায়গায় সিপিএম বহিষ্কার করেছে কয়েক জনকে। কিন্তু বিজেপির হাত ধরার প্রবণতা যে বন্ধ করা যায়নি, হুগলির ঘটনা তারই হাতেগরম প্রমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy