—প্রতীকী চিত্র।
ভোট-মরসুমে একেই সে ভাবে রক্তদান শিবির হয়নি। উলুবেড়িয়া মহকুমার দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কই রক্তাল্পতায় ভুগছে। আর সেই সুযোগে রক্ত নিয়ে কালোবাজারিও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এক ইউনিট রক্ত কিনতে তাঁদের গুনতে হচ্ছে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত!
মহকুমায় দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্ক আছে। একটি শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অন্যটি ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্ত নেই বললেই চলে। শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকেই মহকুমায় রক্তদান শিবির হচ্ছে না। সেই কারণেই রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে। বর্তমানে তাদের জরুরি প্রয়োজনে অল্প কিছু ইউনিট রক্ত মজুত রাখা হয়েছে। অন্য কাউকে রক্ত দেওয়া হচ্ছে না। শীঘ্রই শিবির করা হবে। একই বক্তব্য ফুলেশ্বরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও।
উলুবেড়িয়ায় প্রায় ৪০টি নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতাল আছে। তারা মূলত ওই দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরেই নির্ভরশীল। ওই সব নার্সিংহোম এবং হাসপাতাল থেকে রক্ত চেয়ে লিখিত অনুরোধ এলে ন্যূনতম মূল্যে ব্লাড ব্যাঙ্ক দু’টি থেকে রক্ত দেওয়া হয়। ‘ডোনার কার্ড’ দেখালে শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বিনামূল্যে ও ফুলেশ্বরের বেসরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে সাড়ে চার’শো টাকায় এক ইউনিট রক্ত মেলে। কিন্তু দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্ত না থাকায় নার্সিংহোম ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা সমস্যায় পড়ছেন। তাঁদের পরিজনদের অভিযোগ, পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে কিছু নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতাল। রমরমিয়ে রক্ত নিয়ে কালোবাজারি চলছে।
কী ভাবে?
কিছু নার্সিংহোম এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের পরিজনদের দাবি, রক্ত আনতে বলা হচ্ছে মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে। তাঁরা উলুবেড়িয়ার দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখছেন, রক্ত নেই। তখন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিচ্ছেন, রক্ত তাঁদের কাছে পাওয়া যাবে। প্রতি ইউনিটের জন্য পড়বে অন্তত দেড় হাজার টাকা। রোগীর পরিবার বাধ্য হয়েই চড়া দামে রক্ত কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
প্রশ্ন হল, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না থাকলেও নার্সিংহোমগুলি রক্ত জোগাড় করছে কী ভাবে?
উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক বলেন, “হাওড়া জেলা হাসপাতাল বা কলকাতায় বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত এনে কিছু ছেলে আমাদের বিক্রি করে। সেই কারণে আমরাও রোগীদের কাছে টাকা নিতে বাধ্য হই।”
হাওড়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানান, জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের জন্য তাঁরা রক্তদান শিবির করেন বটে তবে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কিছু করার নেই। ওটা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষই বলতে পারবেন।
উলুবেড়িয়ায় রক্তদান শিবির আয়োজন করে, এ রকম একটিসংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, মাঝেমধ্যে রক্তসঙ্কট হলে কিছু নার্সিংহোম সেই সুযোগে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে তা বাড়িয়ে দেয়। ওই সংস্থার সম্পাদক শাশ্বত পাড়ুই বলেন, “রোগীদের তড়িঘড়ি রক্ত জোগাড় করতে না বলে একটু সময় দেওয়াহলেই রোগীর পরিবার বিনামূল্যে কলকাতা বা হাওড়া থেকে রক্ত সংগ্রহ করে আনতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy