বাগনানে তৃণমূলের সভায় অরুণাভ সেন। নিজস্ব চিত্র
টাকা না-আসায় প্রায় এক বছর ধরে রাজ্যে পঞ্চায়েত স্তরে বন্ধ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ। চলতি মাস থেকেই আবাস প্লাস প্রকল্পে (প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার পরবর্তী ধাপ) টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। নয়া প্রকল্পে দুর্নীতি রুখতে তিনি নিজে নজরদারি করবেন বলে আশ্বাসদিলেন হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন।
রবিবার বাগনানের দেউলটিতে এক জনসভায় অরুণাভ বলেন, ‘‘আবাস যোজনার কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পে ঘর পাওয়ার জন্য কাউকে চার আনা পয়সাও দেবেন না। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে চোর তৈরি করবেন না। যদি নিয়মের মধ্যে না থাকে, তা হলে কেউ আপনাকে বাড়ি পাইয়ে দিতে পারবে না। কেউ যদি আপনার কাছে চার আনা পয়সাও চায়, আমাকে বলবেন। আমি তার কোমরে দড়ি বেঁধে হিড় হিড় করে টানতে টানতে আপনার কাছে নিয়ে যাব।’’
তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ দিন ওই সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে। সভায় এই এলাকার প্রায় ২০০ বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। কেন্দ্র অবশ্য আবাস প্লাসে টাকা দেওয়ার আগে বেশ কিছু কড়া নিয়মকানুন মানার কথা জানিয়েছে। রাজ্য সরকারও কেন্দ্রের নির্দেশিকাকে মান্যতা দিতে কড়াকড়ি করার কথা জেলা প্রশাসনগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে। এ বার শাসক দলের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দেওয়া হল।
অবশ্য গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি এ দিন ওই হুঁশিয়ারিতেই থেমে থাকেননি। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাউকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া যাবে না বলেও সতর্ক করেছেন দলের কর্মী-সমর্থকদের। তিনি মেনে নেন, ‘‘২০১৬-র লোকসভা নির্বাচনে জেতার পরে আমাদের কিছুটা পদস্খলন হয়েছিল। যেখানে আমাদের সভা হচ্ছে, সেই শরৎ ও ওড়ফুলি পঞ্চায়েত এলাকায় মানুষকে আমরা পেশিশক্তির জেরে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে দিইনি। মানুষ আমাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন। এখানে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমরা হেরেছি। যাদের উপরে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছিলাম, তারা এলাকার ‘ডন’ হয়ে উঠেছিল।’’
এ বার প্রত্যেকে অবাধে ভোট দিতে পারবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন বাগনানের বিধায়ক। এমনকি, বিরোধীদের প্রার্থী দিতেও আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও সমস্যা হলে আমি দাঁড়িয়ে থেকে ব্লক অফিসে বিরোধীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে সাহায্য করব। মানুষ অবাধে ভোট দেবেন। তাতে যদি দু’একটি পঞ্চায়েত আমাদের হাত থেকে চলে যায়, কিছু যায়-আসে না।’’
বিরোধীরা অবশ্য গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতির এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। বিজেপি নেতা অনুপম মল্লিক বলেন, "২০১৮-য় বিধায়কের নেতৃত্বে যে সন্ত্রাস হয়েছে, সে জন্য তাঁকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। তার পরে তো আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা আসবে।’’ সিপিএম নেতা সন্তোষ অধিকারী বলেন, "বিরোধীরা ঠিকই প্রার্থী দেবেন। তাঁরা তৃণমূলের দয়ায় বসে নেই। মানুষও বুঝে নেবেন, কী ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হয়। আসলেতৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভুগছে। তারা নিজেদের মধ্যে যেন বোমাবাজি ও মারপিট না করে, সেই উদ্দেশ্যেই নিয়ে এই হুঁশিয়ারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy