সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে বোরো ধান কাটা। তার আগে হুগলি জেলায় বোরো ধানে বিক্ষিপ্ত ভাবে ‘শিস ঝলসা’ বা ‘গিঁট ঝলসা’ রোগ দেখা দিয়েছি। ধানের শিস শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। বিশেষত, খানাকুল ২ ব্লকের পলাশপাই ১ পঞ্চায়েত এলাকার মোস্তাফাপুর, মাগরি এবং বলাপাই মৌজায় এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রচলিত কীটনাশকে বিশেষ কাজ হচ্ছে না বলে দাবি চাষিদের। তাঁরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
স্থানীয় চাষি রণজিৎ ধাড়া, বিমল মাইতি প্রমুখের অভিযোগ, অতীতে ধানের পাতায় ঝলসা রোগ দেখা গেলেও শিসে ঝলসা দেখা যায়নি। প্রথমে ধানের শিসের গোড়ার গিঁট কালো হয়ে যাচ্ছে। পরে শিসটাই শুকিয়ে যাচ্ছে। ওষুধ প্রয়োগ করে পাতা ঝলসা রোগ সামলানো যায়। এটা বিশেষ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় রোগ দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
বিক্ষিপ্ত কয়েকটি মৌজায় এই রোগ দেখা দিয়েছে স্বীকার করে জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “দিন এবং রাতের আবহাওয়ার অনেকটা তারতম্যের (দিনে প্রবল গরম আবার ভোরের দিকে ঠান্ডা) জন্য এই রোগ দেখা দেয়। এখন সেই আবহাওয়া চলছে। ওই রোগ নিরাময়ে ইতিমধ্যে লিফলেট বিলি করে সচেতনতা প্রচার চলছে।”
কৃষি দফতর জানিয়েছে, ‘শিস ঝলসা’ (নেক ব্লাস্ট) ছত্রাকঘটিত রোগ। এর ফলে ধানের বেশির ভাগ শিস শুকিয়ে সাদা বা চিটে হয়ে যায়। এই রোগের জীবাণু হাওয়া এবং বৃষ্টির ঝাপটায় দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। যে সব ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করলে ফল মেলে, তা নিয়ে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত জমির ধান বীজ হিসাবে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে রোগ-পোকার আক্রমণ রুখতে আগাম প্রতিরোধ হিসাবে ধানের গোড়ায় যাতে আলো-বাতাস ঢুকতে পারে, সেই মতো গোড়া ফাঁকা রাখতে হবে বা একটি ধানের সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব বাড়িয়ে
দিতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)