নিম্নবর্গের ইতিহাস সাধনার অন্যতম পথিকৃৎ রণজিৎ গুহ। ছবি: সংগৃহীত।
আগামী ২৩ মে তাঁর ১০০ বছর পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন সুহৃদ, ছাত্রেরা। তার ঠিক আগেই শুক্রবার সন্ধ্যায় নিম্নবর্গের ইতিহাস সাধনার অন্যতম পথিকৃৎ রণজিৎ গুহের জীবনাবসান ঘটল। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা উডসের বাসভবনে স্ত্রী মেখঠিল্ড এবং পরিচর্যাকারীরা শেষ সময়ে তাঁর পাশে ছিলেন।
১৯৫৯-এ এ দেশ ছাড়ার পরে ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে তিনি অধ্যাপনা করেন। এ দেশ থেকে দূরে থাকলেও রণজিতের ছাতার নীচে দীপেশ চক্রবর্তী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে, শাহিদ আমিন, গৌতম ভদ্র, গায়ত্রী স্পিভাক চক্রবর্তী প্রমুখ নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চায় ব্রতী হয়েছিলেন। ঔপনিবেশিক ভারতে কৃষক বিদ্রোহ নিয়ে তাঁর আকর গ্রন্থে এ দেশের গণতান্ত্রিক বোধে কৃষকের ভূমিকা মেলে ধরেন রণজিৎ। গত মার্চেই দীপেশ অস্ট্রিয়ায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। বয়সের ভারে ক্লান্ত হলেও আমৃত্যু জ্ঞানচর্চার পথই আঁকড়ে ছিলেন প্রবীণ ইতিহাসবিদ।
তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রবাদপ্রতিম ঐতিহাসিক রণজিৎ গুহর মৃত্যুতে আমি আমার গভীরতম শোক প্রকাশ করছি। অস্ট্রিয়ায় তাঁর বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন, মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। রণজিৎ গুহ ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে সূদূরপ্রসারী কাজ করেছেন। তিনি নিম্নবর্গীয় ইতিহাস চর্চার ধারা গড়ে তোলেন এবং বেশ কিছু সমমনোভাবাপন্ন তরুণ ঐতিহাসিককে নিয়ে একটি শক্তিশালী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী গড়ে তোলেন। এই নিম্নবর্গীয় ইতিহাস চর্চার প্রভাব পড়ে সারা পৃথিবীতে।ঐতিহাসিক গুহ পৃথিবীর নানা জায়গায় পড়িয়েছেন, নানা জায়গায় তাঁর ছাত্র ও অনুরাগীরা আছে। ঐতিহাসিক গুহর প্রয়াণে জ্ঞানচর্চার পৃথিবীতে অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি রণজিৎ গুহর স্ত্রী মেখঠিল্ড গুহ-সহ তাঁর সকল আত্মীয় পরিজন, ছাত্রছাত্রী ও অনুরাগীদের সকলকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy