Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নারদে কেউ তো বলেননি ছবি তাঁর নয়: কোর্ট

নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন সংক্রান্ত জোড়া মামলার শুনানিতে শুক্রবার এই মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। সেই সঙ্গে বিচারপতি আবার জানিয়ে দিয়েছেন, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের উপরে তিনি কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন না।

বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের উপরে তিনি কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন না।— ফাইল চিত্র।

বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের উপরে তিনি কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন না।— ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৪
Share: Save:

সিবিআইয়ের তরফে দায়ের করা এফআইআর-কে ইতিমধ্যে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন একাধিক অভিযুক্ত। কিন্তু নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের কেউই তো এখনও পর্যন্ত বলেননি যে, ভিডিও ফুটেজে দেখানো ছবি তাঁর নয়!

নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন সংক্রান্ত জোড়া মামলার শুনানিতে শুক্রবার এই মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। সেই সঙ্গে বিচারপতি আবার জানিয়ে দিয়েছেন, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের উপরে তিনি কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন না।

হাইকোর্টের নির্দেশে নারদ-কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। প্রথমে তৃণমূলের আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, পরে বিধায়ক এবং কলকাতার পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি বাগচীর আদালতে মামলা করেছেন। এ দিন দু’টি মামলারই যৌথ শুনানি ছিল। বিচারপতি বাগচী শুনানি চলাকালীন অপরূপার আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরার উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘এ-পর্যন্ত কেউই কিন্তু চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেননি যে, ওটা তাঁর ছবি নয়!’’

নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজ দেখিয়েছে, তৃণমূলের বেশ কিছু মন্ত্রী-নেতা দেদার নগদ টাকা নিচ্ছেন। যে-মোবাইল ফোনের সাহায্যে স্টিং অপারেশন চালানো হয়েছিল, সিবিআই তার হদিসই পায়নি বলে অপরূপার আইনজীবী লুথরা এ দিন আদালতে দাবি করেন। তার পরেই ওই কৌঁসুলির প্রশ্ন, প্রথম ও মূল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ বা যন্ত্র হাতে না-নিয়ে তদন্তকারীরা কী ভাবে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন? আইনজীবী লুথরার আরও দাবি, ল্যাপটপ থেকে পেন ড্রাইভে (দ্বিতীয় তথ্যপ্রমাণ বা যন্ত্র) তোলা ফুটেজকে খাঁটি বলে শংসাপত্র দেওয়া যায় না কোনও ভাবেই। (ওই শংসাপত্র দিয়েছে চণ্ডীগড়ের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি)।

অপরূপার আইনজীবীর এই সওয়াল শুনে বিচারপতি বাগচীর মন্তব্য, ‘‘এই অবস্থায় কি তদন্ত থামিয়ে দিতে বলা যায়? তা ছাড়া প্রথম তথ্যপ্রমাণ খুঁজে না-পেলে দ্বিতীয় তথ্যপ্রমাণের তো গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।’’

অপরূপার আইনজীবী এর পরে জানান, বৈদ্যুতিন তথ্যপ্রমাণের ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের অনেক কিছু দেখতে হয়। কবে, কখন, কী ভাবে, কোন উদ্দেশ্যে ভিডিও ফুটেজ তোলা হয়েছিল, তার সবিস্তার নথি যাচাই হয়েছে কি না, তা অবশ্যই দেখা উচিত। স্টিং অপারেশনের ক্ষেত্রে এগুলো দেখা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী লুথরা।

বিচারপতি বাগচী এ দিন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ এবং সিবিআইয়ের আইনজীবী মহম্মদ আসরাফ আলিকে নির্দেশ দিয়েছেন, ২৭ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পেশ করতে হবে আদালতে। একই সঙ্গে সিবিআই-কে বিচারপতির নির্দেশ, নতুন তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করার থাকলে এই সময়ের মধ্যে সেই কাজটাও সেরে ফেলতে হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE