(বাঁ দিক থেকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দ মেনেই রাজ্যের আরও এক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। বুধবার বাকি থাকা সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগপত্রে সই করলেন বোস। জানা গিয়েছে, বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রণব ঘোষকে রাজভবনে ডেকে নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি।
মঙ্গলবার কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে তপতী চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে জানে আলম, মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌরাংশু মুখোপাধ্যায় এবং হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য পদে নন্দিনী সাহুকে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। তাঁদের সঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও উপাচার্য নিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু প্রণব মঙ্গলবার রাজভবনে উপস্থিত হতে পারেননি। বুধবার তিনি রাজভবনে এসে রাজ্যপালের কাছ থেকে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করেন। এর আগে, রাজ্যের আরও ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন বোস। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হল।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে কেন গড়িমসি করছেন রাজ্যপাল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর কথায়, ‘‘একসঙ্গে সব ক’টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে স্বাক্ষর করা উচিত রাজ্যপালের। অন্তত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমি সেটাই বুঝেছি।’’ ব্রাত্যের দাবি, ‘‘উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টা সুপ্রিম কোর্ট পুরোটাই মুখ্যমন্ত্রীর উপর ছেড়েছে। তার পরও রাজ্যপালের যদি কোথাও ভিন্ন মত থাকে তবে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। এই ব্যাপারে লপ্তে লপ্তে সই করে তিনি বিষয়টা বিলম্বিত করছেন। উপাচার্য নিয়োগের বিষয় শ্লথ করে দেওয়ার কোনও অধিকার ওঁর (রাজ্যপাল) আছে বলে আমরা মনে করি না।’’
রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিবাদ সর্বজনবিদিত। সেই সংঘাতের জেরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্থায়ী উপাচার্য পদ ফাঁকা। আচার্য তথা রাজ্যপালের ঠিক করে দেওয়া অস্থায়ী উপাচার্যেরাই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নবান্ন বনাম রাজ্যপালের বিবাদের নিষ্পত্তি করতে গত ৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে ‘সার্চ-কাম-সিলেকশন’ কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল।
শীর্ষ আদালত বলেছিল, এই কমিটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের জন্য তিনটি নাম বাছাই করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। নামের আদ্যক্ষরের ভিত্তিতে তালিকায় তিনটি নাম থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী তিন জনের মধ্যে পছন্দের ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি করবেন। সেই নামের তালিকা থেকেই এক জনকে বেছে নেবেন রাজ্যপাল। তবে তা নিয়ে শীর্য আদালতে আপত্তি তোলেন বোস। সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে জানায়, রাজ্যপালের আর্জি খারিজ করা হচ্ছে না। পরে প্রয়োজন মতো তা শোনা হবে। আপাতত আগের নির্দেশ মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া চলুক। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরও তিন সপ্তাহ সময় চান রাজ্যপাল। সেই আবেদন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বর, প্রথম পর্যায়ে প্রেসিডেন্সি, বর্ধমান, বাঁকুড়া, কল্যাণী, সিধু-কানহো-বিরসা এবং রানি রাসমণি গ্রিন বিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্যের নাম প্রকাশ্যে এসেছে। প্রেসিডেন্সির উপাচার্য করা হয় নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তীকে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান শঙ্করকুমার নাথ। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপকুমার বর্মণ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে কল্লোল পাল, সিধু-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্রকুমার চক্রবর্তী এবং রানি রাসমণি গ্রিন বিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয় অমিয়কুমার পণ্ডাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy