ধুমধাম করে বাড়ির ছোট ছেলের বিয়ে হয়েছিল। দেড় মাস যেতে না যেতেই উদ্ধার হল সদ্য বিবাহিত তরুণীর ঝুলন্ত দেহ। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পর্ণশ্রী থানার পাঠকপাড়ায়। নববধূর মৃত্যুতে রহস্য দানা বেঁধেছে। পারিবারিক অশান্তি, না কি অন্য কারণ রয়েছে এই মৃত্যুর পিছনে, তা খতিয়ে দেখছে পর্ণশ্রী থানা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম পূজা সিংহ (২৮)। পাঠকপাড়ায় একটি আবাসনের তেতলায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই তিনি স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন। স্বামী মুকেশ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। শ্বশুর সরকারি চাকুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের বাসিন্দা পূজার সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ আগে বিয়ে হয়েছিল মুকেশের। বিয়ের পর থেকে মাঝেমধ্যে তাঁদের মধ্য়ে অশান্তি হত বলে প্রতিবেশীদের দাবি। শনিবার রাত ২টো নাগাদ ঘরের ভিতর থেকে ওই তরুণীর ঝুলন্ত দেহ মেলে। দরজা ভেঙে দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। পূজার আত্মীয়দের দাবি, মৃত্যুর আগে তিনি ভিডিয়ো কলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখনই তাঁদের মধ্যে বচসা হয়।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের অনেক আগে থেকে মুকেশ এবং পূজা পরিচিত ছিলেন। দুই পরিবারের সদস্যরাও একে অপরকে চিনতেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, শনিবার রাতে মুকেশ বাড়িতেই ছিলেন। মধ্যরাতে পারিবারিক কোনও বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হয়। সেই ঝামেলা চলাকালীন তেতলার ঘর থেকে নেমে আসেন মুকেশ। সেই সময়ে তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে প্রতিবেশীদের দাবি। ফোনে পূজার সঙ্গে তাঁর তর্কাতর্কি হচ্ছিল। এর কিছু ক্ষণ পরেই বন্ধ ঘর থেকে পূজার ঝুলন্ত দেহ মেলে। তরুণীর শাশুড়ি মঞ্জু সিংহ রবিবার বলেন, ‘‘ওদের দু’জনের মধ্যে বড় কোনও অশান্তির কথা জানতে পারিনি। কেন এমন করল জানি না।’’
এই ঘটনায় তরুণীর বাড়ির তরফে লিখিত অভিযোগ জানানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। মুকেশের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। সব দিক খোলা রেখেই বধূর মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)