প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে প্রবল মেরুকরণের হাওয়ার মধ্যেও এ বার দু’টি আসনে নিজেদের জয়ের জন্য সিপিএমকে ‘ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা’ জানাল কংগ্রেস। বাংলায় এমন মেরুকরণের নজিরবিহীন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য বামেদের সঙ্গে নিয়েই ভবিষ্যতে পথ চলার দরজা খোলা রাখার কথাও বলছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
তৃণমূলের ২২ এবং বিজেপির ১৮ আসনের বাইরে এ বার কংগ্রেসই শুধু বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ আসন ধরে রাখতে পেরেছে। কঠিন লড়াই করে এই জয় হাসিল করার জন্য দুই বিজয়ী প্রার্থী অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশিই সিপিএমের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও প্রদেশ কংগ্রেস সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য। বিধান ভবনে মঙ্গলবার প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘সিপিএম দু’টি আসনে আমাদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি। সেই দু’টি আসনই আমরা জিতেছি। তার জন্য সিপিএমের নেতা, কর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের ধন্যবাদ। বাম-কংগ্রেস জোট থাকলে এই মেরুকরণের মধ্যেও এর চেয়ে ভাল ফল হত।’’
ভোটের আগে বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনায় অন্যতম সক্রিয় অংশীদার ছিলেন প্রদীপবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ ছিল। কিন্তু তার বিপরীতে বিজেপির বাইরে একটা বিকল্প দেওয়া যেত বাম-কংগ্রেস জোট থাকলে। শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই মানুষ মেরুকরণের পথে গিয়েছেন। বাংলায় এই মেরুকরণ, বিভাজনের রাজনীতি চলতে দেওয়া যায় না। বিকল্পের কথা নতুন করে ভাবতেই হবে।’’ আগামী বছর কলকাতা-সহ রাজ্যের বহু পুরসভার নির্বাচন রয়েছে। তখন বামেদের সঙ্গে জোট ফের গড়ে তোলার জন্য তাঁরা কী উদ্যোগী হবেন? প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘শীঘ্রই প্রদেশ কংগ্রেসের কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হবে। সেখানেই জোট-সহ সব বিষয়ে আলোচনা হবে।’’
সোমেনবাবু, প্রদীপবাবুদের বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত সিপিএম নেতৃত্বও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপির বাইরে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির একত্র হওয়ার যে প্রয়োজন আছে, সেই বক্তব্য এখন আবার মান্যতা পাচ্ছে। রুটি-রুজির লড়াইয়ে জোর না দিলে রাজনীতি এগোতে পারে না।’’ সিপিএমের পক্ষে স্বস্তির খবর, আসন সমঝোতার বিরোধিতা করা বাম শরিকেরা লোকসভা ভোটে সামান্য অস্তিত্বটুকুও খুইয়ে ফেলার পরে এখন আলিমুদ্দিনের পক্ষে বামফ্রন্টে সহমত আদায় করা তুলনায় সহজ।
তবে বামেদের সঙ্গে জোট থাকলে এই অবস্থা হত না বলে মন্তব্য করেও কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র মনে করছেন, ‘‘তৃণমূল-বিরোধিতার সব ফায়দা যাতে বিজেপি পেয়ে না যায়, মেরুকরণের প্রেক্ষিতে সেটাও এখন দেখতে হবে। রাজ্যে সুশাসন ও আইনের শাসনের দাবি আমরা নিশ্চয়ই করব। কিন্তু এমন ভাবে তৃণমূল-বিরোধিতা করা উচিত হবে না, যাতে বিজেপির লাভ হয়।’’
এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য তৃণমূলকেও অনেকাংশে উদ্যোগী হতে হবে বলে ওমপ্রকাশের মত।
আর এই দুর্দিনেও বহরমপুর বিধানসভা এলাকা থেকে অধীরবাবুকে ৯০ হাজার ভোটের ‘লিড’ দেওয়া কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘আগেই জোট করা উচিত ছিল। এখনও বসে বসে দেরি করা উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy