Advertisement
E-Paper

Cadre Rule: বিধি বদলের বিরোধিতা প্রাক্তনদের

ক্যাডার বিধির সংশোধনের প্রস্তাব কেন্দ্র দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৫৬
Share
Save

যে সর্দার বল্লভভাই পটেলের আদর্শ তুলে ধরার কথা বলে কেন্দ্র, তাকে হাতিয়ার করেই আইএএস-আইপিএস ক্যাডার বিধির সংশোধন পরিকল্পনার ‘বিপদ’গুলি ধরিয়ে দিলেন সর্বভারতীয় পেশায় থাকা প্রাক্তন অফিসারেরা। তাঁদের সংগঠন ‘কনস্টিটিউশনাল কনডাক্ট গ্রুপ’ (সিসিজি) বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এমন সংশোধন কার্যকর করা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মূলে কুঠারাঘাত করবে। তেমনই এতে কেন্দ্র-রাজ্যের দড়ি টানাটানির মধ্যে পড়ে সর্বভারতীয় পেশায় থাকা অফিসারদের স্বাধীনতা বা সাংবিধানিক মর্যাদাও ধাক্কা খাবে।

প্রসঙ্গত, সিসিজি-তে সদস্য হিসেবে বিভিন্ন প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতেরা যেমন রয়েছেন, তেমনই আছেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব, এ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিবও। সদস্য তালিকায় নানা রাজ্য ও কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করা বহু আইএএস-আইপিএসও রয়েছেন।

ক্যাডার বিধির সংশোধনের প্রস্তাব কেন্দ্র দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রশাসনে অফিসার সংখ্যা কমার কথা স্বীকার করেই প্রাক্তন আইএএস অফিসারদের অনেকেই জানিয়েছেন, কোনও অফিসারকে দেশের যে কোনও প্রান্তে বদলি করার সুযোগ কেন্দ্র পেয়ে গেলে তার অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। আবার সেই অফিসারের মনোবলও ধাক্কা খাবে প্রবল ভাবে। বস্তুত, এই সংশোধনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল হওয়ার তত্ত্বে পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে পরিকল্পনা বদলের আর্জি জানিয়েছে।

সিসিজি মনে করিয়ে দিচ্ছে, সর্বভারতীয় পেশায় থাকা অফিসারদের গুরুত্ব নিয়ে ১৯৪৯ সালের ১০ অক্টোবর গণপরিষদে সর্দার বল্লভভাই পটেলের বক্তৃতার কথা। সেই বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘ইউনিয়ন চলে যাবে, অখণ্ড ভারত থাকবে না, যদি আপনার কাছে ভাল সর্বভারতীয় পরিষেবা না থাকে, যার মনের কথা বলার স্বাধীনতা আছে, যার নিরাপত্তার অনুভূতি রয়েছে...’।

প্রাক্তন সর্বভারতীয় অফিসারদের সংগঠনের মতে, কেন্দ্র যে সংশোধনের চেষ্টায় নেমেছে, তার বেশ কয়েকটি কুফল রয়েছে। এক, অফিসার ব্যবহারের প্রশ্নে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতার যে ভারসাম্য এত দিন ছিল, তা দুর্বল হবে। এ ব্যাপারে বাড়তি ক্ষমতাধর হবে কেন্দ্র। দুই, এতে রাজ্যের স্বার্থ সর্বভারতীয় পেশায় থাকা অফিসারদের কাছে গৌণ হতে পারে। অগ্রাধিকার পেতে পারে কেন্দ্রের স্বার্থ। আবার কেন্দ্রে যে শাসকদল থাকবে, তাদের অপছন্দ হয়, এমন কোনও পদক্ষেপ করতে অফিসারেরা ভয় পাবেন। কারণ, তাতে আচমকা বদলি বা হেনস্থার আশঙ্কা থাকবে। এতে নীতি কার্যকর করতে রাজ্যগুলির যেমন সমস্যা হবে, তেমনই কেন্দ্রের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অস্ত্রও ভোঁতা হবে। তিন, এই বিধির অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। কারণ, কোনও রাজ্যের উপরে কেন্দ্র রুষ্ট হলে তারা সেই রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের ডিজি, জেলাশাসক বা পুলিশ সুপারদের মতো সর্বভারতীয় পেশার অফিসারদের নিশানা করতে পারে। তাদের পদ থেকে প্রত্যাহার করে অন্যত্র বদলি করলে রাজ্যের প্রশাসনে বড় ধাক্কা লাগবে।

রাজ্যের দিক থেকেও সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা সংগঠনের। তাদের বক্তব্য, এতে রাজ্য সিভিল সার্ভিসের অফিসারদের (এ রাজ্যের ক্ষেত্রে ডব্লিউবিসিএস) গুরুত্ব অনেক বেশি বাড়বে। বরং আইএএস, আইপিএস-এর মতো সর্বভারতীয় পেশার অফিসারদের সন্দেহ এবং অবিশ্বাসের নজরে দেখবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য। ফলে তাঁদের গুরুত্ব কমলে রাজ্যের কাজকর্মের মানও খারাপ হবে। এমনকি, আইএএস, আইপিএস অফিসারদের জন্য বরাদ্দ ক্যাডার পদের সংখ্যা কমিয়ে তা রাজ্য সার্ভিসের অফিসারদের দিতে পারে রাজ্যগুলি। কেন্দ্র-রাজ্যের আলোচনা, অফিসারদের সম্মতির ভিত্তিতে যে ক্যাডার ব্যবস্থাপনা এত দিন চলত, তা বদলে গেলে অফিসারদের মনোবল ব্যাপক ভাবে ধাক্কা খাবে। তাই এই সংশোধনের প্রস্তাবকে একতরফা, অযৌক্তিক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে এটি কার্যকর করা থেকে বিরত থাকার আর্জি জানিয়েছে সিসিজি।

IAS IPS

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}