শেষ যাত্রায় বড়মা। নিজস্ব চিত্র।
খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই মাতৃশোকে ডুবে গিয়েছিল নদিয়ার হাজার হাজার মতুয়া পরিবার। বুধবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ রওনা হয়েছিলেন ঠাকুরনগরের উদ্দেশ্যে। বড়মাকে এক বার শেষ দেখা দেখতে। তাঁর শেষকৃত্যে অংশ নিতে। এঁদের মধ্যে তৃণমূলপন্থী এবং বিজেপিপন্থী মতুয়ারা ছিলেন। কিন্তু এই দিনটার জন্য তাঁরা যাবতীয় বিভেদ, রাজনীতি ভুলেছিলেন। কোনও রকম উত্তেজনা, বাদানুবাদ ছাড়াই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বড়মাকে।
স্থানীয় তৃণমূল ও বিজেপি নেতারা নিজ-নিজ পক্ষের কয়েক শো মতুয়াকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। এর বাইরেও উভয় দলের সমর্থক বহু মানুষ ঠাকুরনগর গিয়েছেন। ট্রেনে-বাসে পাশাপাশি বসেছেন। কিন্তু এ দিন কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। দুই দলের একাধিক নেতাই স্বীকার করেছেন, এ দিন বিজেপি বা তৃণমূল নয়, মতুয়ারা শুধু মতুয়া হিসাবেই আবেগে ভেসে বড়মার শেষকৃত্যে গিয়েছেন। তৃণমূলপন্থী এক মতুয়া জেলা নেতার কথায়, “আজ রাজনীতি করার মন নেই। আজ মনটা বড় ভার হয়ে আছে। কেবলই মনে হচ্ছে, বড়মাকে যদি একটি বার শেষ দেখা দেখতে পাই।”
এ দিন সকাল থেকে নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রেনে চেপে মতুয়ারা রওনা হয়েছেন বনগাঁর দিকে। সেখান থেকে ঠাকুরনগর। বিশেষ করে রানাঘাট থেকে বনগাঁগামী ট্রেনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ট্রেনে উঠতে পারবেন না বুঝে অনেকে গাড়ি ভাড়া করে রওনা হয়ে হয়েছিলেন। বুধবার ভোরে একাই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন বেতাইয়ের অনাথ ভক্ত। বাসে আসেন কৃষ্ণনগর। সেখান থেকে ট্রেনে রানাঘাট ও বনগাঁ হয়ে ঠাকুরনগর। দীর্ঘ পথ যাওয়ার জন্য তিনি এক বারের জন্যও ভাবেন নি। তার কথায়, “কে কখন যাবে, কে তৃণমূলের লোক কে বিজেপির সে সব ভাবার বা খোঁজ নেওয়ার সময় হয়নি। শুধু মনে হয়েছিল আমাকে যেতেই হবে।” প্রায় একই কথা বলেছেন চাকদহের ঘেটুগাছির নারায়ণ বিশ্বাস—“আজ আর কোনও রাজনীতি নয়। কোনও ঝান্ডা নয়। আজ আমি শুধুই এক জন মতুয়া। পাশাপাশি তৃণমূলপন্থী ও বিজেপিপন্থী মতুয়ারা শান্তিপূর্ণ ভাবে ট্রেনে-বাসে চেপে গিয়েছেন।” সকলকে মিলিয়ে দিয়েছেন বড়মা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy