তাঁর আগে সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন এমন কমবয়সি নেতা কম নেই। কিন্তু তাঁর মতো লোক টানার ক্ষমতা এই মুহূর্তে যে কোনও নেতারই নেই, তা মানেন প্রায় সকলেই। সেই তিনি, বঙ্গ সিপিএমের যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দিল সিপিএম। তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে পাঁচ দিনের পার্টি কংগ্রেস শেষ হল রবিবার। সেখান থেকেই ৮৫ জনের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হয়েছে। সেই কমিটিতেই মিনাক্ষী-সহ নতুন পাঁচ জন গেলেন বাংলা থেকে। বাদও পড়েছেন বাংলার পাঁচ জন।
বয়স এবং নানাবিধ কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরতে হল সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, অঞ্জু কর, রেখা গোস্বামী এবং অমিয় পাত্রকে। মিনাক্ষী ছাড়া বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেন দার্জিলিংয়ের সমন পাঠক, হুগলির দেবব্রত ঘোষ, পূর্ব বর্ধমানের সৈয়দ হোসেন, মহিলা নেত্রী কনীনিকা ঘোষ বসু।
মিনাক্ষীর যে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়া পাকা তা গত ফেব্রুয়ারিতেই লেখা হয়েছিল আনন্দবাজার ডট কমে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী গঠন হবে। সেখানেও ঠাঁই হতে পারে যুবনেত্রীর। যদিও আগামী জুন মাসেই তাঁর আর যুবনেত্রীর পরিচয় থাকবে না। সদ্য ৪০ পার করা মিনাক্ষী যুব সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন থেকে রাজ্য সম্পাদকের পদ তো ছাড়বেনই, ছাড়বেন যুব সংগঠনও। আপাতত তাঁকে পার্টির কাজেই ব্যবহার করবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
আরও পড়ুন:
কুলটি থেকে উঠে আসা মিনাক্ষীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়া প্রসঙ্গে বঙ্গ সিপিএমের শীর্ষ সারির এক নেতা বলেন, ‘‘রাজ্য স্তরে যুব আন্দোলন করতে করতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়া নজিরবিহীন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রয়াত মানব মুখোপাধ্যায় যুবনেতা হিসাবে খ্যাতি পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রেও এই রকম হয়নি।’’ ঘটনাচক্রে মানব কখনও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যই হননি। জীবনের সায়াহ্নে এসে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন কয়েক বছর। আবার মানব যখন সিপিএমের নেতা ছিলেন, তখন দলের এই সঙ্কটকালও ছিল না। ফলে নেতারও অভাব ছিল না।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ‘হালখাতা’ হল হুগলির। অতীতে কখনও শিল্পাঞ্চলের এই জেলা থেকে কেউ দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাননি। বিজয় মোদক, মহীতোষ নন্দী, পরিতোষ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তাবড় নেতারা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও জায়গা করতে পারেননি। তিন বছর আগে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা করে দলে ‘নজির’ গড়েছিলেন দেবব্রত। এ বার তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে গেলেন। অনেকের মতে, হুগলির সংগঠন, ভোট প্রাপ্তি, জেলায় গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে দেওয়া এবং সর্বোপরি সুসংগঠিত ভাবে রাজ্য সম্মেলন করার পুরস্কার পেলেন ডানকুনির নেতা। তবে প্রবীণ নেত্রী মিতালী কুমার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেও তিনি জেলায় কাজ করার জন্য তা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই অর্থে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসাবে কাজ করেননি।