ওএমআরে গলদ থাকায় ‘যোগ্য’দের তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে নাম। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে নতুন করে আন্দোলন শুরু করলেন সেই ‘অযোগ্য’রা। অন্য দিকে, একে একে কাজে ফিরছেন শিক্ষকদের অনেকেই। এসএসসি দফতরের সামনে অবস্থানের চতুর্থ দিনে কমতে শুরু করেছে বিক্ষোভকারীদের লোকবল। বৃহস্পতিবার সকালে মাত্র ৫০০ মিটারের ব্যবধানেই দেখা গেল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনের দুই ভিন্ন ছবি।
ওএমআরে সমস্যা থাকায় যাদের ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এসএসসি ভবনের সামনে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে আদালতে ওএমআরে কারচুপির বিষয়টি এখনও প্রমাণিত হয়নি, সেখানে এসএসসি কী করে তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে দাগিয়ে দিয়ে বেতন বন্ধ করে দিতে পারে? এই নিয়ে এসএসসি ভবনের অদূরেই পৃথক অবস্থানে বসেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে এখনও চাকরিহারাদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। চতুর্থ দিনে লোকসংখ্যা আগের তুলনায় খানিক কমলেও এখনই আন্দোলন উঠছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার থেকে একে একে স্কুলমুখী হতে শুরু করেছেন শিক্ষকদের একাংশ। গরমের ছুটি পড়ার আগে পর্যন্ত পালা করে করে স্কুলে যাবেন তাঁরা। চাকরিহারা শিক্ষিকা সঙ্গীতা মণ্ডল বলেন, ‘‘আদালতের রায় মেনে আমাদের স্কুলে যেতে হবে। তবে এরই পাশাপাশি আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা পালা করে স্কুলে যাব। আজ বেশ কিছু শিক্ষকশিক্ষিকা স্কুলে গিয়েছেন। অযোগ্যদের যত ক্ষণ না বাদ দেওয়া হচ্ছে, তত ক্ষণ আন্দোলন চলবে।’’
এর মধ্যেই আবার নিবেদিতা ভবনে শিক্ষাকর্মীদের অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিন জন শিক্ষাকর্মী। তবে অসুস্থতা সত্ত্বেও তাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্য দিকে, করুণাময়ীতে অবস্থান চলছে বাতিল হওয়া শিক্ষাকর্মীদের। তাঁদের দাবি, শিক্ষকদের মতো শিক্ষাকর্মীদেরও স্কুলে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।
রাজ্যের তরফে ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ নন, এমন ১৭ হাজার ২০৬ জন শিক্ষকের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। সেই তালিকা সুপ্রিম কোর্টেও জমা দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বুধবারই সেখান থেকে আরও ১৮০৩ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র-সহ একাধিক বিষয়ে সমস্যা রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পর্ষদ। তাঁদের নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকায় শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৫,৪০৩। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, এই শিক্ষকেরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন এবং বেতন পাবেন। তাঁদের নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিতে হবে, যে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলতি বছরের মধ্যে শেষ করতে বলেছে শীর্ষ আদালত।