ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মুসা। —নিজস্ব চিত্র।
চোদ্দো বছরে দ্বিতীয় বার। ২০০২-এ আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গি হানার তদন্তে কলকাতায় পা দিয়েছিল ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। আমেরিকার গোয়েন্দাসংস্থাটি এ বার কলকাতায় এল আইএস জঙ্গি সন্দেহে ধৃত মুসা-কে জেরা করতে।
বীরভূমের লাভপুরের ছেলে মহম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসা গত ৪ জুলাই বর্ধমান স্টেশনে পুলিশের জালে ধরা পড়ে। এই মুহূর্তে সে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র হেফাজতে। এফবিআইয়ের জনা সাতেক গোয়েন্দার একটি দল বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সোজা চলে যান সল্টলেকের এনআইএ-র রাজ্য অফিসে। সেখানে মুসার সঙ্গে তাঁরা ঘণ্টা তিনেক
কথা বলেছেন।
এর আগে বাংলাদেশ পুলিশের তদন্তকারীরাও কলকাতায় এসে মুসাকে জেরা করে গিয়েছেন। মুসা প্রথমে ছিল সিআইডি’র হেফাজতে। পরে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর চাঁইদের সঙ্গে তার ‘ওঠা-বসা’র তথ্য মেলায় তদন্তভার বর্তায় এনআইএ’র উপরে। তারা জানতে পারে, পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় খুন-নাশকতা চালানোর দায়িত্ব পেয়েছিল মুসা। তদন্তকারীদের দাবি, ত্রাস ছড়ানোর লক্ষ্যে মুসাকে বলা হয়েছিল বীরভূমের বাগানবাড়িতে কলকাতার এক প্রোমোটার ও তাঁর দেহরক্ষীকে গলা কেটে খুন করতে।
প্রথম দফায় ২৮ দিন গোয়েন্দা হেফাজতে কাটানোর পরে গত অগস্ট ইস্তক মুসা জেলেই ছিল। মার্কিন গোয়েন্দারা যাতে তাকে জেরা করতে পারেন, সে জন্য এনআইএ এ দিন তাকে কোর্টে তুলে নিজেদের হেফাজতে চায়। দু’দিনের হেফাজত মঞ্জুর হয়। জাতীয় তদন্তকারীরা চলতি মাসেই মুসার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করবে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। কিন্তু মুসা তো খুন বা নাশকতায় অভিযুক্ত নয়! তা হলে মার্কিন গোয়েন্দাদের কৌতূহল কেন?
সূত্রের খবর: বাংলাদেশের আইএস-চাঁই আবু সুলেমান সম্পর্কে মুসার কাছে বিশদে জানতে চেয়েছে এফবিআই। মুসা ভারতীয় গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল, আইএস ভারতের মাটিতে মার্কিন নাগরিকদের উপরে হামলার ছক কষেছে, যা রূপায়ণের মূল দায়িত্বে সুলেমান। ঢাকার গুলশন-কাণ্ডের মতো আইএস এখানেও বেছে বেছে বিদেশিদের খুন করতে চায়। মুসার এ হেন স্বীকারোক্তির খবর সঙ্গে সঙ্গে দিল্লি মারফত ‘উপযুক্ত’ জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ‘‘মনে হয়, আমাদের তথ্যের সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণ মিলে গিয়েছে। তাই এফবিআই সটান কলকাতায় চলে এসেছে।’’— মন্তব্য এক গোয়েন্দা-কর্তার। মার্কিন কনস্যুলেট অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
গোয়েন্দা-সূত্রের খবর: মুসা মূলত ফেসবুকের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে আইএস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। ফেসবুকে দু’তরফের লেনদেন করা বেশ কিছু তথ্য ভারতীয় গোয়েন্দারা এখনও উদ্ধার করতে পারেননি। ফেসবুকের সদর দফতর যে হেতু মার্কিন মুলুকের ক্যালিফোর্নিয়ায়, তাই এফবিআই এখন সে ব্যাপারে সচেষ্ট হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy