Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Jungle

এ বার বনকর্মীদের সঙ্গেই গভীর জঙ্গলে রাত কাটাতে পারেন আপনিও

আপনিও হয়ে উঠতে পারেন চাঁদের পহাড়ের শঙ্কর রায়চৌধুরী!

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সোমনাথ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ১৫:১৯
Share: Save:

ঘুটঘুটে অন্ধকার। ঘন জঙ্গলে মিটমিট করে জ্বলছে জোনাকিরা। ঝিঁঝিঁপোকারা ডেকেই চলেছে। হঠাৎ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের গর্জন! পিলে চমকে যাওয়ার জোগাড়।

আপনি কি এমন পরিবেশে রাত কাটাতে চান? একেবারে জঙ্গলের ‘কোর’ এলাকায়? বিলাসবহুল হোটেল নেই কিন্তু। নেই বিশেষ কোনও সুযোগ-সুবিধাও। আপনার চার দিকে শুধুই ঘন, গাঢ় জঙ্গল। সারা ক্ষণ শুনতে পাবেন পাখিদের কলরব। আপনার হাতের নাগালেই ছুটে বেড়াচ্ছে হরিণ। খুব কাছ থেকেই দেখতে পাবেন দামাল হাতিরা জল খাচ্ছে। অদূরে শোনা যাবে বাঘের হুঙ্কার। হয়তো আপনি শুয়ে রয়েছে, দেখলেন দৌড়চ্ছে বাইসন। আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, দেখলেন একঝাঁক টিয়া উড়ে যাচ্ছে।

কয়েকটা দিনের জন্য শহুরে জীবন ছেড়ে একেবারে বন্য হয়ে ওঠার সুযোগ এসেছে। না, এ জন্য ‘আমাজন অভিযান’-এ যেতে হবে না। ঘরের কাছেই এমন সুযোগ করে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আপনিও হয়ে উঠতে পারেন চাঁদের পহাড়ের শঙ্কর রায়চৌধুরী! প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁচাতে, জীবজন্তুদের প্রতি ভালবাসা বাড়াতে ‘বন্যপ্রাণ সাথী প্রকল্প’ চালু করেছে রাজ্য। বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ। আপনি বনকর্মীদের মতোই কয়েক দিন জঙ্গলে কাটানোর সুযোগ পাবেন। তাঁদের মতো করে জঙ্গল ঘুরতেও পারবেন। তাঁরা কী ভাবে পশুপাখিদের দেখভাল করেন, তা-ও হাতেকলমে শেখার সুযোগ পাবেন। বন দফতরের আশা, এ ভাবে কিছু দিন জঙ্গলে কাটানোর পর ফিরে গিয়ে ‘অভিযাত্রী’রা সাধারণ মানুষকে সচেতন করবেন।

আরও পড়ুন- বাঘ বাঁচানোর দরকার ছিল, বুঝল খুদেরা ​

আরও পড়ুন- বাঘ হত্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বকেই চ্যালেঞ্জ বন দফতরের রিপোর্টে​

কিছু দিনের জন্য জঙ্গল-জীবন উপভোগ করার জন্য সুন্দরবন, গরুমারা, জলদাপাড়া, বক্সার মতো ছ’টি জাতীয় উদ্যান এবং ১৫টি অভয়ারণ্যকে বেছে নিয়ে বন দফতর। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “বন্যপ্রাণ সাথী প্রকল্প কিন্তু মুনাফার জন্য নয়। সরকারের লক্ষ্য, বন্যপ্রাণ নিয়ে আরও সচেতনতা বাড়ানো। নামমাত্র টাকায় আমরা ৩০ জনকে গভীর জঙ্গলে থাকার ব্যবস্থা করতে পারব। প্রত্যেকেই উত্তরবঙ্গ এবং সুন্দরবনে সাত দিন করে থাকতে পারবেন।”

ভারতের মধ্যে প্রথম এই ধরনের অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। প্রাক্তন মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রদীপ ব্যাসের মাথাতেই প্রথম আসে এই ভাবনা। তাঁর কথায়, “আমাদের সকলেরই পশুপাখিদের দেখভালের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। সমাজের সব স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।” এ বিষয়ে প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিনহা বলেন, “আমরা চাই সমাজের সব ধরনের মানুষেই প্রকৃতিকে বাঁচাতে উদ্যোগী হন।”

যাঁরা এই অভিযানে যেতে চান, তাঁরা www.wildbengal.com- এ চোখ রাখুন। এখানে সবিস্তার সব রয়েছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আবেদন করতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jungle west bengal royal bengal tiger বাঘ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE