রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নাম না করে কটাক্ষ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিবাদ কোনও নতুন ঘটনা নয়। বাংলার রাজনীতিতে এখন তা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। বৃহস্পতিবার সেই দ্বন্দ্ব পৌঁছাল এক অন্য মাত্রায়। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সুকুমার রায়ের বিখ্যাত কবিতা ‘লড়াই ক্ষ্যাপা’-র আটটি পঙক্তি পোস্ট করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই ছড়ার এই পঙক্তিগুলিতেই পাগলা জগাইয়ের চরিত্র তুলে ধরেছিলেন কবি। কবিতাটি পোস্ট করে উপরের অংশে ব্রাত্য লিখে দেন, ‘প্রসঙ্গ : অনুমোদন’। তাঁর এমন পোস্টের পরেই কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে, সেটি কাকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল বর্তমানে সস্ত্রীক দার্জিলিং সফরে গিয়েছেন। সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করেন তিনি। কলকাতা, যাদবপুর-সহ রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে বলে টুইটে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। টুইটে করে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তালিকাও প্রকাশ করেন তিনি। সেই তালিকায় কলকাতা, যাদবপুর, গৌড়বঙ্গ, আলিপুরদুয়ার, বর্ধমানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে। রাজ্যপালের এই অভিযোগে যদিও আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। কিন্তু বেলা বাড়তেই কার্যত নাম না করে নাট্যকার শিক্ষামন্ত্রী পাল্টা টুইট করেই খোঁচা দেন রাজ্যপালকে।
সম্প্রতি ব্রাত্য-রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করার বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যপাল। ব্রাত্য বলেছিলেন, ‘নিয়মে বদল করে অন্তর্বর্তীকালীন আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে ওই পদে বসানো যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য।’ এর পর টুইট করেও ব্রাত্য লিখেছিলেন, 'ঔপনিবেশিক রীতি মেনে, রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার নিয়ম চালিয়ে যাওয়া উচিত, না কি বিশিষ্ট বা শিক্ষাবিদদের এই পদে মনোনীত করা যায়? তা ভেবে দেখার সময় এসেছে।’ পাল্টা রাজ্যপালও মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপাল করার কথা বলে কটাক্ষ করেছিলেন ব্রাত্যকে।
— Bratya Basu (@basu_bratya) December 30, 2021
প্রসঙ্গত, কলকাতা, যাদবপুর-সহ রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল। টুইটে করে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেই তালিকায় কলকাতা, যাদবপুর, গৌরবঙ্গ, আলিপুরদুয়ার, বর্ধমানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে।
রাজ্যপালের এই অভিযোগকে যদিও আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। আইনজীবী তথা তৃণমূল মুখপাত্র বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘‘রাজ্যপালের কোনও অভিযোগেরই গুরুত্ব তৃণমূল দেয় না। তাঁর উচিত ছিল রাজ্যপাল হিসাবে তাঁর নিজের সাংবিধানিক পদের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা। কিন্তু তিনি তাঁর দিল্লির ‘বস’দের কথায় বিভিন্ন রাজনৈতিক মন্তব্য করছেন। রাজভবনকে বিজেপি-র পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলেছেন। তাই ওঁর কোনও কথার কোনও গুরুত্ব আমাদের দলের কাছে নেই।’’
অনতিঅতীত রাজ্যপাল-রাজ্যের সঙ্ঘাত ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালন সংক্রান্ত বিষয়ে। সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের সব উপাচার্যদের ডেকে পাঠান ধনখড়। তা নিয়ে নতুন করে সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাজ্যপাল একের পর এক টুইটে দাবি করতে থাকেন, তাঁর উপর্যুপরি ডাকেও সাড়া দিচ্ছেন না বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যেরা। ‘শাসকের অঙ্গুলি হেলনেই’ এমন হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন পদাধিকার বলে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি বলেন, “আইনের নয়, শাসকের আইনের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থায়। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।” আচার্যের অনুমোদন ছাড়া রাজ্য সরকার যে ভাবে উপাচার্যদের নিয়োগ করেন, তাও আইনের প্রহসন বলেও অভিযোগ তুলেছেন ধনখড়। টুইটে আপলোড করা ভিডিয়োয় ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন)-কে এ নিয়ে তদন্ত করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
পাল্টা হিসাবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, নিয়মে বদল করে অন্তর্বর্তীকালীন আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে ওই পদে বসানো যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য। এর পর টুইট করে ব্রাত্য লিখেছিলেন, “ঔপনিবেশিক রীতি মেনে, রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার নিয়ম চালিয়ে যাওয়া উচিত, না কি বিশিষ্ট বা শিক্ষাবিদদের এই পদে মনোনীত করা যায়? তা ভেবে দেখার সময় এসেছে।’’
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এর আগেও একাধিকবার সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসাবে ‘কর্তৃত্ব ফলানোর’ অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অতিমারি পর্বের আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে একাধিকবার বিক্ষোভের সম্মুখীনও হতে হয়েছিল তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy