ট্রাঙ্কে করে চার্জশিট নিয়ে যাওয়া হল আদালতে। —নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পার্থ এবং অর্পিতা গ্রেফতার হওয়ার ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিট দিল ইডি। ট্রাঙ্কে ভরে সেই চার্জশিট এবং পাহাড়প্রমাণ নথি নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থ এবং অর্পিতার নামে থাকা মোট ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, এসএসসি দুর্নীতি মামলার মূল চার্জশিট ১৭২ পাতার। সঙ্গে ১৪ হাজার ৬৪০ পাতা জুড়ে রয়েছে ছবি-সহ বিপুল পরিমাণ নথি। চার্জশিটে পার্থ এবং অর্পিতা ছাড়াও ছ’টি সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলি হল ‘ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট’, ‘সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘সিমবায়োসিস’, ‘ভিউ মোর হাইরাইজ প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘অনন্ত টেক্সফ্যাব প্রাইভেট লিমিডেট’ এবং ‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিস’। চার্জশিটে পার্থ, অর্পিতা এবং ছ’টি সংস্থার বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থ লেনদেন প্রতিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় ৪৩ জন সাক্ষীর উল্লেখ করেছে ইডি।
সোমবার সেই চার্জশিট এবং নথি ট্রাঙ্কে ভরে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্কশাল আদালত চত্বরে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ এবং অর্পিতার নামে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে তদন্তের প্রথম ধাপেই জানিয়েছিল ইডি। অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ কোটি কোটি টাকা এবং সোনার গয়না। ঘটনাচক্রে, বেশ কয়েক দফায় তল্লাশি চালিয়ে ওই নগদ টাকা উদ্ধারের পর তা-ও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকটি ট্রাঙ্কে করেই।
ইডি-র তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, মামলার সঙ্গে সাময়িক ভাবে সংযুক্ত করা হয়েছে ৪৮ কোটি ২২ লক্ষ টাকার সম্পত্তি। তার মধ্যে রয়েছে, ৪০টি স্থাবর সম্পত্তি যার মূল্য ৪০ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও ৩৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার সাত কোটি ৮৯ লক্ষ টাকাও সাময়িক ভাবে যুক্ত করা হয়েছে ওই মামলার সঙ্গে। পাশাপাশি রয়েছে, ফ্ল্যাট, খামারবাড়ি এবং কলকাতায় জমিও।
গত ২২ জুলাই এসএসসি নিয়োগে ‘দুর্নীতি’-কাণ্ডে নাকতলায় পার্থের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। তার পর তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই দিন গভীর রাতে (তারিখ অনুযায়ী ২৩ জুলাই, শনিবার) গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থকে। প্রাক্তন মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অভিনেত্রী-মডেল অর্পিতার টালিগঞ্জের আবাসনে হানা দেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে নগদ প্রায় ২২ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও খোঁজ মেলে টাকার পাহাড়ের। সেখানে প্রায় ২৮ কোটি টাকা পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে, প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকা এবং সোনাদানা উদ্ধার ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। টাকা উদ্ধারের পর গ্রেফতার করা হয় অর্পিতাকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy