—ফাইল চিত্র।
বাঘাযতীন থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার রাজ্যে সব পুর নিগম এবং পুরসভাগুলির জন্য বিশেষ নির্দেশ দিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, কোনও হেলে পড়া বাড়ি সোজা করতে গেলে সংশ্লিষ্ট পুরসভার অনুমতি বাধ্যতামূলক। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পুরসভার মেয়র। সেই ঘটনার পরেই কলকাতা পুরসভার শীর্ষকর্তাদের পাশাপাশি পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি। সেই বৈঠকের পরে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, বাড়ির মালিক, প্রোমোটার কিংবা নির্মাণকারী সংস্থার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষকেও অবৈধ নির্মাণ রুখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে হবে। নির্মাণ কাজের অনুমোদন নেওয়ার পাশাপাশি নির্মাণের পরেও ‘স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি’ রিপোর্ট দেখে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে।
এ ক্ষেত্রে হেলে পড়া বাড়ি লিফ্টিং বা সোজা করার আগে সংশ্লিষ্ট পুরসভার অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাড়ির মালিক বা প্রোমোটার যে সংস্থা নিয়োগ করছেন, তার যাবতীয় নথিপত্র-সহ গোটা প্ল্যান পুরসভায় জমা করতে হবে। পুরসভাও সেই সমস্ত রিপোর্ট বিশেষজ্ঞকে দিয়ে খতিয়ে দেখে তবেই কাজের অনুমোদন দেবে। বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে কাজ করাতে হবে। কাজ হওয়ার পরেও ‘স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি’ রিপোর্ট জমা করতে হবে। কাজের সময় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার ক্ষতিপূরণ দেবেন মালিক বা প্রোমোটার। এমন নির্দেশিকার কারণ প্রসঙ্গে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাঘাযতীনে যে বাড়িটি হেলে পড়েছিল তা নিয়ে তদন্ত করতে নেমে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ এবং পুর দফতর জেনেছে, বাড়িটি হেলে পড়লেও তা নিয়ে আশঙ্কার কোনও কারণ ছিল না। কিন্তু বাড়িটি হেলে পরার কারণে বহুতলের দু’টি ফ্ল্যাট বিক্রি করতে প্রোমোটারের সমস্যা হচ্ছিল। তাই নিজ উদ্যোগে একটি আনকোরা সংস্থাকে দিয়ে বাড়ি সোজা করাতে গিয়েছিলেন প্রোমোটার সুভাষ রায়। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ধরনের বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা যেমন কলকাতা পুরসভাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে, তেমনই ওই বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাশ্রয় করে দিয়েছে। কলকাতা তথা কোনও পুরসভা এলাকায় যাতে এ রকম ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেই কারণেই এমন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।’’
মূলত জমির চরিত্র না বুঝে নির্মাণের ভিত সঠিক ভাবে তৈরি না করায় বাঘাযতীনের বহুতল বাড়িটি হেলে গিয়েছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কোনও ক্ষেত্রে যদি সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি পুরসভার অনুমতি না নেন, তা হলে তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। কারণ, বাঘাযতীনে বিপর্যয়ের পর যে ভাবে কলকাতা পুরসভাকে সার্বিক ভাবে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়তে হয়েছে, তাতে রাজ্যের যে কোনও পুরসভা এলাকায় এই ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতে চাইছে পুর দফতর। এমনিতেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা পুরসভা এলাকায় অভিযোগের অন্ত নেই। তার উপর বহুতল হেলে পড়ার ঘটনা নতুন করে বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে তাদের। কলকাতার মেয়রই যে হেতু রাজ্যের পুরমন্ত্রী, তাই তড়িঘড়ি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে মত দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের একাংশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy