Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
West bengal Assembly

‘প্রতিহিংসাপরায়ণ, স্বৈরাচারী’! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের খসড়ার ছত্রে ছত্রে ক্ষোভ শাসকদলের

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাংলার শাসকদলের বিধায়ক-নেতাদের হয়রান করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নিন্দা প্রস্তাবের খসড়ায় এমনটাই উল্লেখ তৃণমূল সরকারের। বিধানসভায় পেশ করা হবে এই প্রস্তাব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৫৮
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা পাচার, গরু পাচারের মতো কেলেঙ্কারিতে গত কয়েক মাস ধরেই সক্রিয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে— বার বার এই অভিযোগ করেছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সোমবার বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ইতিমধ্যেই সেই নিন্দা প্রস্তাবের খসড়া প্রকাশ্যে এসেছে।

কেন নিন্দা প্রস্তাব, তার কারণ উল্লেখ করে খসড়ায় তুলে ধরা হয়েছে, ‘বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের বিধায়ক এবং নেতৃবৃন্দ, যাঁদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে, তাঁদের প্রতি নরম মনোভাব প্রদর্শন করছে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে শাসক দলের জনপ্রতিনিধি, নেতৃবৃন্দকে হয়রান ও গ্রেফতার করে রাজ্যে এক অস্থির বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করছে।’ প্রসঙ্গত, সারদা ও নারদ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু তাঁকে কেন তলব করছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, এ নিয়ে বরাবর সরব হয়েছে তৃণমূল। এ ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।

নিন্দা প্রস্তাবের খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ও তার শাসক দল বিজেপি নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জয়ী হতে না পেরে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে, অগণতান্ত্রিক কায়দায় স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে পশ্চিমবাংলায় নির্বাচিত সরকার ও রাজ্যের বিধায়ক, মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধি, সরকারি আধিকারিক, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, দোকানদার, কৃষক, ছাত্র যুব-সহ সকল স্তরের শুভার্থীদের উপর বিভিন্ন কায়দায় একতরফা অত্যাচার করে যাচ্ছে।’

খসড়া প্রস্তাবে এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২১ সালে বাংলায় তৃতীয় বার তৃণমূল সরকার গঠনের পর ‘বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ক্রিয়াকলাপ এক নজিরবিহীন জায়গায় পৌঁছয়, যখন বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতির জন্য আবেদন না করেই কয়েক জন প্রবীণ বিধায়কের বিরুদ্ধে একটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট দাখিল করেছে।’ শাসক তৃণমূলের অভিযোগ, প্রচ্ছন্ন কোনও উদ্দেশ্যে রাজ্যের শাসকদলের বিধায়ক ও নেতাদের জন্য ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব তৃণমূল সরকারের।

বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব তৃণমূল সরকারের। গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

গণতন্ত্রকে অবমাননা করে ষড়যন্ত্র করে কোথাও বিধায়ক কিনে সরকারকে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও নির্বাচিত সরকারকে হেনস্থা করে ঘৃণ্য রাজনীতির চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও খসড়া প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কার্যকলাপে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা, বিধানসভার সদস্য ও রাজ্যবাসীর সম্মান ও মর্যাদাহানি হচ্ছে বলে সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল।

প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ইতিমধ্যেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পদাধিকারী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গরুপাচার-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। কয়লা পাচার-কাণ্ডে একাধিক বার ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে বিধানসভায় তৃণমূল সরকারের নিন্দা প্রস্তাব রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ।

অন্য বিষয়গুলি:

West bengal Assembly TMC CBI ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE