এই ধুলো পেরিয়েই যাতায়াত।— নিজস্ব চিত্র
এ রাস্তা দিয়ে গেলে ‘ধুলোর ঝড়ে’ পড়া বাধ্যতামূলক। পিচ উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে ধুলো। গাড়ির চাকায়-চাকায় তা-ই চেহারা নিচ্ছে ঝড়ের। সে ঝড় থেকে বাঁচলেন তো এক পাশ বসে যাওয়া রাস্তায় বেকায়দা কাত হয়ে যেতে পারে গাড়ি। চালক সামলাতে না পারলে রাস্তা ছেড়ে গাড়ি নেমে পড়তে পারে পাশের জলাশয়ে। সে ঝক্কি কাটাতে না কাটাতে আর এক বিপদ। পাশের অস্থায়ী সেতু থেকে লোহার রড ঢুকে রয়েছে এ রাস্তায়। যে কোনও সময় খোঁচা লাগার আতঙ্ক। মোটের উপরে বর্ধমান-সিউড়ি (২-বি) জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ অংশ এখন নিত্যযাত্রীদের কাছে বিভীষিকা।
বর্ধমানের নবাবহাট মোড় থেকে ভেদিয়ার আন্ডারপাস (একফুঁকো) পর্যন্ত প্রায় ৪৬ কিলোমিটার রাস্তা নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ। আগে জাতীয় সড়কের এই অংশটুকুতে আউশগ্রামের ভেদিয়ায় সংকীর্ণ আন্ডারপাস গলে যাতায়াত আর তালিতের রেলগেটের জন্য যানজটের সমস্যা নিয়ে সরব ছিল লোকে। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাস্তার দশা। প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফতেপুর গ্রাম, শিবদা মোড় প্রভৃতি এলাকায় রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে পাথর দেখা যাচ্ছে। বটগ্রাম ক্যানাল ও কৈলাশ স্টোর-বাঙালপাড়ায় রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ। বটগ্রাম স্কুল মোড়, হামিদপুর মোড়, মল্লিকপুর বিলের কাছে রাস্তার এক দিক বসে গিয়েছে। আবার ইটাচাঁদা মোড় দিয়ে যেতে গেলে কার্যত ‘ধুলো-ঝড়ে’র সম্মুখীন হতে হয় যাত্রীদের।
নবাবহাটের ১০৮ মন্দির পেরিয়ে সেচখাল লাগোয়া এলাকায় রাস্তার পাশে একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি হয়েছে। সেখানকার চারটি থাম থেকে চারটি লোহার রড অন্তত ছ’ইঞ্চি করে বেরিয়ে রয়েছে রাস্তার দিকে। যাত্রীদের আশঙ্কা, গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে ওই রডে খোঁচা লেগে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওই জায়গাতেই রাস্তার ভাঙাচোরা অংশের উপরে পাতা রয়েছে লোহার পাত। সামান্য বৃষ্টি হলেই যার উপরে ধুলো থেকে কাদা জমে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে মোটরবাইক আরোহীদের পক্ষে। পিছলে যায় মোটরবাইকের চাকা।
অথচ, এই রাস্তা ধরে অনেকেই কলকাতা-বোলপুর রুটে যাতায়াত করেন। পর্যটকদের গাড়ির পাশাপাশি, এই রাস্তা গিয়ে দিনভর পাথর, বালিবোঝাই বহু ট্রাক চলে। বীরভূম থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে আসতেও অনেকে এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন।
নিত্যযাত্রী মঙ্গলকোটের যুবক অভিজিৎ ঘোষের ক্ষোভ, ‘‘পিচ উঠে গিয়ে রাস্তার ওই অংশে এখন এত ধুলো, যে রোজই ধুলোর ঝড়ে পড়ি বলতে পারেন। হেলমেট পরেও চোখে-মুখে ধুলো ঢোকা আটকায় না। ধুলোর জন্য শীতের রাতে ঘন কুয়াশাও থাকছে। সেটা আর এক বিপজ্জনক ব্যাপার!’’ ‘বীরভূম-বর্ধমান নিত্যযাত্রী সমিতি’র সম্পাদক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “এখন ওই রাস্তায় প্রাণ হাতে করে যেতে হচ্ছে।”
রাস্তা খারাপের জন্য ওই অংশে অনেকেই বাস চালাতে চাইছেন না বলে দাবি গুসকরা বাসস্ট্যান্ডের তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বছরখানেক আগে রাস্তাটি কিছুটা সংস্কার করে রাজ্যের পূর্ত দফতর (হাইওয়ে ডিভিশন ২)। কিন্তু তার পরেও এত সমস্যা হচ্ছে কেন? সরাসরি জবাব না দিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী বাস্তুকার তীর্থ রায়ের আশ্বাস, ‘‘রাস্তাটা সারানোর জন্য ১০ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। দরপত্রও ডাকা হয়েছে। আশা করছি, বর্ষার আগেই কাজ শেষ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy