আহত অলোক বিশ্বাস। ছবি: তাপস ঘোষ
লোকসভা ভোটে তুমুল সাফল্য সত্ত্বেও এলাকায়-এলাকায় বিজয় মিছিল করতে বারণ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলির বলাগড়ে তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া সকেট বোমায় গুরুতর জখম হলেন এক যুবক।
রবিবার রাতে বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ায় চরকৃষ্ণবাটি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণে অলোক বিশ্বাস নামে ওই যুবকের চোয়ালে গভীর ক্ষত হয়। সামনের দু’টি দাঁতও ভেঙে যায়। তাঁকে প্রথমে বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সকালে কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক অলোককে তাঁর বাবার উপস্থিতিতেই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান বলে অভিযোগ।
পরে অলোককে ফের চুঁচুড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। হুগলির এসপি সুনীল চৌধুরী জানিয়েছেন, ওই বিজয় মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি। সকেট বোমায় এক যুবকের জখম হওয়ার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বলাগড় যে লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে, সেই হুগলিতে বিপুল ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের রত্না দে নাগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, দলের চর কৃষ্ণবাটি অঞ্চল সভাপতি বাদল সরকারের নেতৃত্বে শ’দেড়েক কর্মী-সমর্থক বিজয় মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে টিনের কৌটোয় ভরা সকেট বোমা ছোড়া হচ্ছিল। তা দেখতে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বছর পঁচিশের অলোক। একটি বোমা তাঁর সামনে এসে ফাটে। অলোক চিৎকার করে পড়ে যান। মুখ থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। মিছিল তত ক্ষণে এগিয়ে গিয়েছে। আত্মীয়-পড়শিরা অলোককে কালনায় নিয়ে যান।
গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতেই এ দিন তৃণমূলের লোকজন অলোককে সরকারি হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। ‘ছুটি’ দেওয়ার পরিস্থিতি না থাকায় সংশ্লিষ্ট শল্য চিকিৎসক তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অলোকের বাবা, পেশায় দিনমজুর সঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, “যা রোজগার করি, তাতে ছেলের ভাল চিকিৎসা করাতে পারব না। তাই নেতাদের ভরসায় আছি।”
তৃণমূলের বলাগড় ব্লক সভাপতি বিশ্বনাথ দাস বলেন, “নিছকই দুর্ঘটনা। তবে ছেলেটির যাতে যথাযথ চিকিৎসা হয়, সে দিকে নজর রাখছি।” বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক অসীম মাঝির দাবি, নেতাদের কেউ মিছিলে ছিলেন না। দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, “নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে ওখানে বিজয় মিছিল হয়েছে। তার পরে যা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy